প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২০:২৫:০১ : বিহারের পূর্ণিয়ায় ডাইনি সন্দেহে একই পরিবারের পাঁচজনকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন তিনজন নারী এবং দুইজন পুরুষ। এই মর্মান্তিক ঘটনার পর গ্রামে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্থানীয়দের দাবী, কিছু গ্রামবাসী বাবু লাল ওরাওঁর মাকে ‘ডাইনি’ সন্দেহ করতেন। এরপর ওই পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালানো হয় এবং পরে জীবন্ত আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়। খুনের পর মৃতদেহগুলো একটি নির্জন স্থানে পুঁতে ফেলা হয়।
এই ঘটনাটি ঘটেছে মুফাসসিল থানার অন্তর্গত রাজিগঞ্জ পঞ্চায়েতের তেতগামা ওয়ার্ড-১০-এ। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, মৃতরা হলেন সীতা দেবী (৪৮), বাবু লাল ওরাওঁ (৫০), কাতো দেবী (৬৫), মনজিত ওরাওঁ (২৫) এবং রানী দেবী (২৩)। পরিবারের একমাত্র জীবিত সদস্য সোনু জানান, তার ঠাকুমা কাতো দেবীকে কালো জাদু করার অভিযোগে গ্রামপ্রধান নকুল ওরাওঁর নেতৃত্বে রবিবার রাতে এক সভা ডাকা হয়েছিল। সভায় প্রায় ২০০ জন গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন।
সোনু জানান, গ্রামবাসীরা তার ঠাকুমার অনুনয়-বিনয় না শুনে, পুরো পরিবারকে ‘ডাইনি’ বলে ঘোষণা করে। প্রথমে লাঠি ও রড দিয়ে সবাইকে বেধড়ক মারধর করা হয়, এরপর তাদের গায়ে পেট্রোল ঢেলে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। যখন সবাই মারা যায়, তখন মৃতদেহগুলো ট্র্যাক্টরে করে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। সোনু কোনওভাবে পালিয়ে গিয়ে প্রাণে বাঁচে এবং পুলিশকে ঘটনার বিস্তারিত জানান।
ঘটনার খবর পাওয়ার পর মুফাসসিল থানাসহ তিনটি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ সুপার সুইটি সাহরাওয়াত ও এএসপি অলোক রঞ্জনও ঘটনাস্থলে যান। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় এফআইআর নথিভুক্ত করে তদন্ত শুরু হয়েছে। মুফাসসিল থানার ওসি উত্তম কুমার জানান, গ্রামপ্রধান নকুল ওরাওঁ ও এক ট্র্যাক্টর চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সন্ধ্যায় তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ, বাকিদের খোঁজ চলছে।
No comments:
Post a Comment