বিনোদন ডেস্ক, ০৪ জুলাই ২০২৫: আশির দশকের সুন্দরী অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম হলেন মহুয়া রায়চৌধুরী। যেমন রূপ, তেমনই ছিল তাঁর গুণ। নিজের দক্ষ অভিনয় দিয়ে দর্শকদের মনে অনেকটা জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু জীবনের শেষ সময় ভীষণ যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে কাটাতে হয় তাঁকে। অভিনেত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু রহস্য আজও সবাইকে ভাবিয়ে তোলে। ১৯৮৫ সালের ২২ শে জুলাই মহুয়ার শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। সেদিনই শেষ হয়ে যায় বেঁচে থাকার লড়াই। মাত্র ২৭ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি দেন অভিনেত্রী।
টলিপাড়ায় সেদিন নেমে এসেছিল শোকের ছায়া। কিন্তু অভিনেত্রীর গায়ে সেদিন কীভাবে আগুন লাগল! আজও এই টলিপাড়ার অন্দরমহলে এটা একটা রহস্য হয়ে রয়ে গিয়েছে। নেটপাড়ায় বিভিন্ন ধরণের মন্তব্য উঠে এলেও আসল সত্যি আজও অধরা। একেক জন এক এক ধরণের মতামত পোষণ করেন এই বিষয়ে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, মৃত্যুর আগে বাইশটি ছবির কাজ ছিল অভিনেত্রীর হাতে। কিন্তু তার মধ্যে মাত্র চারটি ছবির কাজ তিনি শেষ করতে পেরেছিলেন। অর্ধসমাপ্ত ছিল সাতটা ছবি এবং বাকি ১১ টা ছবিতে শুধুমাত্র সই করেছিলেন তিনি। অভিনেত্রীর মৃত্যুর খবর জানার পরেও কিন্তু টলিউডের শুটিং বন্ধ হয়নি। তবে কি এই প্রতিযোগিতাই কেড়ে নিল এমন এক প্রতিভাসম্পন্ন অভিনেত্রীকে? সেই সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দেননা কেউ কেউ।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা যায় একাধিক ছবিতে কাজ করলেও মহুয়ার পারিশ্রমিক ৩০ হাজারের বেশি ছিল না। এমনকি অনেক ছবিতে বিনা পারিশ্রমিকেও তাঁকে কাজ করতে হয়েছে। এরপর স্বামী তিলকের সাথে আলাপ অভিনেত্রীর জীবন বদলে দেয়। বাড়ির অমতে পালিয়ে গিয়ে দুজনে গাঁটছড়া বাঁধেন। অনেকেরই মত, এই বিয়েই নাকি অভিনেত্রীর কাল হয়েছিল।
জানা গিয়েছে দাম্পত্যের প্রথম তিনটে বছর খুব সুখেই কাটে দুজনের। এই সময়েই ছেলে তমালের জন্ম। ছেলেকে খুব ভালবাসলেও কাজের কারণে সঙ্গ দিতে পারতেন না মহুয়া। ক্রমশ তিলকের সন্দেহ বাড়তে থাকে স্ত্রীকে নিয়ে। জানা যায়, মহুয়া নাকি ক্রমশ বেপরোয়া হয়ে ওঠেন, আসক্ত হয়ে পড়েন মদের নেশায়। এমনকি এও শোনা যায়, স্বামী তিলক সঙ্গ দিতে না পারলে একের পর এক নায়কের সঙ্গে তিনি ঘনিষ্ট হয়েছেন। সেই তালিকায় কখনও তাপস পাল, কখনও অমল পালেকরের নাম ছিল। অভিনয় দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভিতরে-ভিতরে কোথাও যেন ফুরিয়ে যাচ্ছিলেন মহুয়া, চোখে মুখে অত্যাচার, ক্লান্তির ছাপ।
জানা যায়, অগ্নিদগ্ধ হওয়ার দিনও মহুয়ার সকাল শুরু হয় মদ্যপান দিয়ে। কিন্তু সেই মদ্যপ অবস্থায় গায়ে আগুন দেওয়া কি সম্ভব? তবে, তিলক জবানবন্দিতে বলেছিলেন, ছেলের জন্য দুধ গরম করতে গিয়েই স্টোভ থেকে আগুন ধরে যায় মহুয়ার গায়ে। যদিও এখনও এই নিয়ে ধোঁয়াশার অবসান হয়নি। অভিনেত্রীর এমন মৃত্যু নিয়ে নানান রকম সন্দেহ জাগে জনমানসে।
No comments:
Post a Comment