প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ১২ জুলাই ২০২৫, ০৯:০০:০১ : ১১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে পবিত্র শ্রাবণ মাস, যা চলবে ৯ আগস্ট পর্যন্ত। ভারতীয় সংস্কৃতিতে শ্রাবণ মাসকে ভগবান শিবের মাহাত্ম্যময় মাস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই সময় বর্ষার হওয়ায় কৃষি ও সমৃদ্ধির সঙ্গেও এর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
এই মাসে বহু ধর্মীয় নিয়ম মানা হয়, যার মধ্যে অন্যতম হল – দাড়ি না কাটার রীতি। প্রশ্ন উঠতে পারে, এর কোনও বৈজ্ঞানিক কারণ আছে কি? হ্যাঁ, এই প্রথার পেছনে কিছু বৈজ্ঞানিক ও আয়ুর্বেদিক ব্যাখ্যাও রয়েছে।
শ্রাবণে দাড়ি না কাটার পেছনে বৈজ্ঞানিক কারণ:
ত্বকের সুরক্ষা:
শ্রাবণে অতিরিক্ত বর্ষণের কারণে বাতাসে আদ্রতা ও ছত্রাকের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। এই সময় রেজার দিয়ে দাড়ি কাটলে ত্বকে কাটা বা ক্ষত হতে পারে, যার ফলে ইনফেকশন বা র্যাশ, রিংওয়ার্ম, ফোড়া ইত্যাদির সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
প্রাচীন জীবাণুনাশকহীন যুগে সাবধানতা:
যখন আধুনিক জীবাণুনাশক বা শেভিং যন্ত্র ছিল না, তখন বর্ষায় দাড়ি কাটলে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকত। সেই থেকেই এই রীতি শুরু বলে অনুমান করা যায়।
প্রাকৃতিক সুরক্ষা:
দাড়ি বা মাথার চুল ত্বককে সূর্য, ধুলো ও জীবাণুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। তাই শ্রাবণে এগুলো না কাটলে প্রাকৃতিকভাবে ত্বক রক্ষা পায়।
হরমোনাল পরিবর্তন:
বিভিন্ন গবেষণা বলছে, ঋতু পরিবর্তনের সময় টেস্টোস্টেরন-এর মতো হরমোনের মাত্রা পরিবর্তিত হয়, যা চুল ও দাড়ির বৃদ্ধি প্রভাবিত করে। এই সময় দাড়ি না কাটলে দেহের প্রাকৃতিক চক্র বজায় থাকে।
আয়ুর্বেদ কী বলে?
আয়ুর্বেদ অনুযায়ী, বর্ষা ঋতুতে শরীরের পাচনশক্তি দুর্বল থাকে এবং শরীর অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়। এই সময় অপ্রয়োজনীয় শারীরিক পরিবর্তন, যেমন চুল বা দাড়ি কাটা, এড়াতে বলা হয়।
মানসিক বা আধ্যাত্মিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ:
শ্রাবণ মাসে মানুষ শিবের উপাসনা ও সাধনার মাধ্যমে আত্মসংযমের পথে চলেন। দাড়ি না কাটা এক ধরনের তপস্যা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি বাহ্যিক সাজের বদলে অন্তর্মুখী ভাবনায় মনোনিবেশে সহায়তা করে।
কিছু ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, এই সময় চুল বা দাড়ি কাটলে নেতিবাচক শক্তি আকর্ষিত হতে পারে বা এটি শিবের প্রতি অসম্মান বলেও ধরা হয়।
No comments:
Post a Comment