পুতিনকে বড় ধাক্কা দেওয়ার প্রস্তুতি, জেলেনস্কির সাথে মস্কো আক্রমণের পরিকল্পনা ট্রাম্পের!

প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ১৫ জুলাই ২০২৫, ২০:২৫:০১ : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যক্তিগতভাবে ইউক্রেনকে রাশিয়ার উপর গভীর আক্রমণ করার জন্য উৎসাহিত করেছেন। একটি প্রতিবেদন অনুসারে, তিনি এমনকি জিজ্ঞাসা করেছেন যে আমেরিকা যদি দূরপাল্লার অস্ত্র সরবরাহ করে তবে ইউক্রেন কি মস্কো এবং সেন্ট পিটার্সবার্গকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে। ফিনান্সিয়াল টাইমস এবং ওয়াশিংটন পোস্টের একটি প্রতিবেদনে এই প্রকাশ করা হয়েছে, যা ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে সাম্প্রতিক কথোপকথনের উপর ভিত্তি করে তৈরি।

প্রতিবেদন অনুসারে, ৪ জুলাই জেলেনস্কির সাথে ফোনে কথোপকথনের সময় ট্রাম্প জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে আমেরিকা যদি দূরপাল্লার অস্ত্র সরবরাহ করে তবে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী কি রাশিয়ার গভীর সামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণ করতে পারে। তিনি সরাসরি জেলেনস্কিকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, "আপনি কি মস্কো এবং সেন্ট পিটার্সবার্গকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারেন?" ফিনান্সিয়াল টাইমসের মতে, ট্রাম্প এই কথোপকথনে বলেছিলেন যে তিনি রাশিয়াকে ব্যথা অনুভব করতে চান যাতে এটি একটি শান্তি চুক্তিতে বাধ্য করা যায়।

মনে করা হচ্ছে যে ট্রাম্প এখন রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি হতাশ এবং আগের চেয়ে আরও আক্রমণাত্মক অবস্থান গ্রহণ করছেন। প্রথমে তিনি মার্কিন-রাশিয়া সম্পর্ক সহজ করার এবং ইউক্রেন থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেও এখন তিনি রাশিয়াকে কড়া অর্থনৈতিক শাস্তি এবং ন্যাটোর মাধ্যমে অস্ত্র সরবরাহের কথা বলছেন।

ওভাল অফিসে ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটের সাথে এক বৈঠকে ট্রাম্প রাশিয়াকে সতর্ক করে বলেন যে যুদ্ধ বন্ধ না হলে মস্কোকে কড়া শুল্ক এবং অর্থনৈতিক জরিমানা ভোগ করতে হবে। তিনি আরও বলেন যে এই যুদ্ধের সমাপ্তি নিয়ে তিনি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ।

ওয়াশিংটন পোস্টের ১৪ জুলাইয়ের এক প্রতিবেদন অনুসারে, ট্রাম্প ইউক্রেনকে ৩০০ কিলোমিটার পাল্লার ATACMS ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, আমেরিকা এখন টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার কথাও বিবেচনা করছে, যা সরাসরি মস্কো এবং সেন্ট পিটার্সবার্গে আক্রমণ করতে পারে। যদিও এই টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রগুলি বর্তমান ১০ বিলিয়ন ডলারের সাহায্য প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত নয়, তবে ট্রাম্প যদি রাশিয়ার উপর চাপ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে ভবিষ্যতে এগুলি অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। প্রতিবেদন অনুসারে, শুক্রবার পর্যন্ত এই বিষয়ে আলোচনা চলছিল।

ট্রাম্পের এই অবস্থানকে ইউরোপীয় মিত্র এবং ইউক্রেন একটি ইতিবাচক লক্ষণ হিসেবে দেখেছে। ইউক্রেন দীর্ঘদিন ধরেই দাবী করে আসছিল যে আমেরিকা রাশিয়ার উপর চাপ বাড়াবে। এখন যেহেতু ট্রাম্প শান্তির পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছেন এবং রাশিয়ার উপর সামরিক ও অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ করতে প্রস্তুত, কিয়েভ আশা করছে যে আমেরিকার ভূমিকা নির্ণায়ক প্রমাণিত হতে পারে। তবে, হোয়াইট হাউস এই প্রতিবেদনের কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।