উত্তর ২৪ পরগনা, ১৩ জুলাই ২০২৫: পার্কের মধ্যে একের পর এক গাছ এবং গাছের ডাল কাটা নিয়ে চাঞ্চল্য। ভোটের আগেই রাজনৈতিক পারদ চড়ল উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে। রীতিমত ভাইরাল সেই ভিডিও। এই নিয়ে একযোগে শাসক দলকে নিশানা করল সিপিএম এবং বিজেপি। কেউ বললেন এই গাছ বিক্রি করে ২১শে জুলাইয়ের ডিম ভাতের আয়োজন চলছে আবার কেউ বললেন ২১শে জুলাইয়ের টাকার টান পড়েছে তাই সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাছ বিক্রি করে টাকার জোগাড়ে ব্যস্ত তৃণমূল।
শনিবার বিকেলে গাছ কাটার ঘটনাটি ঘটে অশোকনগর কল্যাণগড় পৌরসভা পরিচালিত মিলেনিয়াম সাইন্স পার্কে। স্থানীয় বাসিন্দাদের পার্কের ভিতর গাছ কাটার ঘটনাটি নজরে আসতেই তাঁরা মোবাইল ফোনে ভিডিও করেন। যারা এদিন গাছ কাটছিলেন তাঁদের এই গাছ কাটার অনুমতি কে দিয়েছে প্রশ্ন করা হলে তারা বলেন, 'অশোকনগর পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকার অনুমতি দিয়েছেন'। কিন্তু অনুমতির কাগজ দেখতে চাইলে তাঁরা কাগজ দেখাতে অস্বীকার করে বলেন, চেয়ারম্যান আমাদের মৌখিক ভাবে জানিয়েছে।
এর পরে স্থানীয় বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক সাগর বিশ্বাস ফোন করেন চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকারকে। চেয়ারম্যান ফোনে ওই স্কুল শিক্ষককে জানিয়েছেন, তিনি ছোট ছোট ডাল কাটতে বলেছেন। কিন্তু ওই শিক্ষকের বক্তব্য, প্রায় ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকার গাছ এবং গাছের ডাল কাটা হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে এখানেই, বন দফতরের অনুমতি ছাড়া কী করে পৌরসভার পৌর প্রধান এই গাছ কাটার অনুমতি দেয়? আর এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই শাসক দলকে একযোগে নিশানা করেছে সিপিএম এবং বিজেপি।
এই নিয়ে আমরা কথা বলেছিলাম অশোকনগরের সিপিএম নেতা সত্যসেবী করের সঙ্গে। তিনি বলেন, 'এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই, ২১ শে জুলাই উপলক্ষে ডিম ভাতের টাকা জোগাড় করছে শাসক দল।' পাশাপাশি বিজেপি নেতা বাপি মিস্ত্রি বলেন, ২১ শে জুলাই উপলক্ষে টাকার টান পড়েছে শাসক দলের, তাই সরকারি গাছ বিক্রি করে টাকার জোগাড়ে ব্যস্ত তৃণমূল।
যদিও এই ঘটনা নিয়ে অশোকনগর পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রবোধ সরকারের সাথে বারবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি। পরবর্তীতে এই ঘটনা নিয়ে অশোকনগর পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান ধীমান রায়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, 'পৌরসভার চেয়ারম্যান যদি অনুমতি দিয়ে থাকেন, তাহলে অবশ্যই বন দফতরের সঙ্গে কথা বলেই দিয়েছেন।' কিন্তু বন দফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এরকম কোনও ঘটনা তাঁরা জানেন না। আর গাছ কাটার অনুমতি কোনও পৌরসভা দিতে পারে না।
No comments:
Post a Comment