Friday, July 4, 2025

অতিরিক্ত জল পানে কিডনির কীভাবে ক্ষতি হয়? জানলে অবাক হবেন



লাইফস্টাইল ডেস্ক, ০৪ জুলাই ২০২৫: আমাদের শরীরের সকল কাজের জন্য জল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি শরীর থেকে বিষাক্ত এবং ক্ষতিকারক উপাদান অপসারণে সাহায্য করে। এটি পরিপাকতন্ত্র ঠিক রাখে, ত্বক সুস্থ রাখে এবং শক্তির মাত্রা বজায় রাখে। একজন স্বাভাবিক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে প্রতিদিন প্রায় ২ থেকে ৩ লিটার জল পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়। জল পান স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী কিন্তু অতিরিক্ত জল পান ক্ষতিকারক হতে পারে।


অতিরিক্ত জল পানের অসুবিধা

অনেক সময় মানুষ সুস্থ থাকতে বা জলশূন্যতা এড়াতে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি জল পান করতে শুরু করে। কিন্তু অতিরিক্ত জল পান করলে আমাদের কিডনির ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে। যখন আমরা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি জল পান করি, তখন আমাদের কিডনিকে শরীর থেকে অতিরিক্ত জল অপসারণের জন্য আরও বেশি পরিশ্রম করতে হয়। এর ফলে কিডনির ওপর চাপ বৃদ্ধি পায় এবং এর কার্যকারিতা ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে।


অতিরিক্ত জল পান করলে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কমে যেতে পারে, যাকে হাইপোনাট্রেমিয়া বলা হয়। এই অবস্থায় আমাদের শরীরের কোষগুলি ফুলে যেতে শুরু করে, যা মস্তিষ্ক এবং কিডনির কোষগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। যদি এটি বেশি সময় ধরে চলতে থাকে, তাহলে কিডনির পরিস্রাবণ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়। ধীরে ধীরে কিডনি বিকল হওয়ার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়।


অতিরিক্ত জল পানের লক্ষণ-

অতিরিক্ত জল পান করলে শরীরে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়। এর লক্ষণগুলি ধীরে ধীরে দেখা দিতে শুরু করে। প্রথমত, ব্যক্তির ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা হয়। এর ফলে রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এ ছাড়া হাত-পা ফুলে যাওয়া, ক্রমাগত ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, মাথাব্যথা এবং মানসিক বিভ্রান্তির মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা যদি খুব বেশি কমে যায়, তাহলে ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। প্রস্রাবের রঙ যদি খুব হালকা থাকে, তাহলে এটি শরীরে জলের পরিমাণ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি হওয়ার লক্ষণ। যদি এই অবস্থা দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকে, তাহলে কিডনির কার্যকারিতা দুর্বল হয়ে পড়ে। যার কারণে বিষাক্ত পদার্থ শরীর থেকে সঠিকভাবে বের হতে পারে না এবং অনেক গুরুতর রোগ দেখা দিতে পারে।


অতিরিক্ত জল পান এড়ানোর উপায়

আপনার তৃষ্ণা অনুযায়ী জল পান করা উচিত। দিনে ৭-৮ গ্লাস জল পান করাই সাধারণত যথেষ্ট। কিন্তু যদি আপনি প্রচুর ঘামেন বা ব্যায়াম করেন, তাহলে শুধু জলের পরিবর্তে নারকেলের জল বা ওআরএসের মতো ইলেক্ট্রোলাইটযুক্ত পানীয় পান করুন। আপনার যদি ঘন ঘন প্রস্রাব করার প্রয়োজন বোধ হয় বা ক্রমাগত ক্লান্ত বোধ করেন, তাহলে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।


জল পান করা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু অতিরিক্ত জল পান করাও ক্ষতিকারক হতে পারে। তাই সঠিক পরিমাণে জল পান করুন এবং আপনার শরীরের চাহিদা বুঝেই পান করুন।

No comments:

Post a Comment