মহারাষ্ট্র থেকে শুরু করে সমগ্র উত্তর ভারত এখন ভরে উঠেছে গণেশ চতুর্থীর আনন্দে। ঘরে ঘরে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছেন ভগবান গণেশ, আর আগামী দশ দিন ধরে চলবে ভক্তিভরে পূজা, আরাধনা ও নানা আচার অনুষ্ঠান।
হিন্দু ধর্মে ভগবান গণেশকে বলা হয় প্রথম পূজ্য দেবতা। যেকোনও শুভ কাজের শুরু হয় তাঁর নাম উচ্চারণ করেই। তাই গণেশ চতুর্থী শুধু মহারাষ্ট্র বা মুম্বই নয়, আজ সারা দেশজুড়ে মানুষের কাছে এক অন্যতম আনন্দোৎসব।
প্রতি বছর ভাদ্রপদ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে পালিত হয় এই উৎসব। এ বছর ২৭ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে গণেশ চতুর্থী। এই দিন ভোরবেলা থেকে বাজারে ভিড় চোখে পড়ার মতো। প্রতিটি বাড়ি, মণ্ডপ, পাড়া কিংবা মন্দিরে প্রতিমা প্রতিষ্ঠার ধুম পড়ে যায়। শঙ্খ, ঘণ্টা ও মন্ত্রধ্বনিতে মুখরিত হয় পরিবেশ।
ভক্তির আবহ
ভক্তরা বিশ্বাস করেন, ভগবান গণেশের কৃপা পেলে জীবনের সব বাধা দূর হয়, সুখ-সমৃদ্ধি আসে সংসারে। তাই এই উৎসবে ভক্তরা নানা বিশেষ আচার পালন করেন। কারও বাড়িতে প্রতিদিন সন্ধ্যায় আরতি হয়, কারও বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয় গীত, ভজন, নাটক বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আধ্যাত্মিক দিক
জ্যোতিষশাস্ত্রেও গণেশ চতুর্থীকে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। এই সময়ে ভগবান গণেশকে খুশি করতে বিশেষ কিছু নিয়ম মানার পরামর্শ দেওয়া হয়। যেমন—
ভগবান গণেশকে দূর্বা ঘাস, লাড্ডু, নারকেল ও সিঁদুর নিবেদন করা।
গণেশ মন্ত্র জপ করা।
দরিদ্রদের মধ্যে ভোগ বিতরণ করা।
ভক্তদের বিশ্বাস, এইসব নিয়ম মেনে পূজা করলে জীবনে মানসিক শান্তি আসে এবং ভগবানের আশীর্বাদে সব কাজ সফল হয়।
গণেশ চতুর্থীর অন্যতম আকর্ষণ হলো বিশাল আকারের গণেশ মূর্তি। শিল্পীরা মাসের পর মাস ধরে সুন্দর প্রতিমা তৈরি করেন। উৎসবের শেষ দিনে বিসর্জন যাত্রা হয়, যেখানে ঢাক-ঢোল, গানের সুর আর ভক্তদের উল্লাসে পরিবেশ মাতোয়ারা হয়ে ওঠে।
সারকথা, গণেশ চতুর্থী আজ আর কেবল ধর্মীয় আচার নয়, বরং এক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উৎসব, যা মিলিয়ে দেয় হাজারো মানুষকে একই ভক্তি ও আনন্দের আবহে।
No comments:
Post a Comment