ভুলে যাওয়া, মাথা ঝিমঝিম—খাবারের কারণেই কি বাড়ছে ব্রেন ফগ? - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday, August 28, 2025

ভুলে যাওয়া, মাথা ঝিমঝিম—খাবারের কারণেই কি বাড়ছে ব্রেন ফগ?

 


বয়স বাড়লে স্মৃতিশক্তি কিছুটা কমে যাওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার। তবে অনেক সময় অল্প বয়সেই বারবার ভুলে যাওয়া, মনোসংযোগে সমস্যা বা মাথা ঝাপসা লাগার মতো অভিজ্ঞতা হয়। এই অবস্থাকেই সাধারণভাবে বলা হয় ব্রেন ফগ।


ব্রেন ফগ কী?


‘ব্রেন ফগ’ আসলে কোনও নির্দিষ্ট চিকিৎসা বিষয়ক শব্দ নয়। মাথা ঝিমঝিম করা, একাগ্রতা কমে যাওয়া, বারবার ভুলে যাওয়া কিংবা অকারণে ক্লান্তি—এসব একসঙ্গে হলে একে ব্রেন ফগ বলা হয়। সাধারণত মানসিক চাপ, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, অনিদ্রা বা ডিপ্রেশনের কারণে এমনটা হয়। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিনের খাবারের সঙ্গেও এর গভীর যোগ রয়েছে।


গবেষণায় কী উঠে এসেছে?


বিশেষজ্ঞদের মতে, যাঁরা অতিরিক্ত মিষ্টি, ভাজাভুজি, তেলমশলা বা বেশি কার্বোহাইড্রেট খেয়ে থাকেন, তাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে এই অভ্যাস চলতে থাকলে সেই অতিরিক্ত শর্করা মস্তিষ্কের রক্তনালিকায় ক্ষতি করে এবং স্নায়ুতন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়ে। এর ফলে দেখা দেয় মাথাব্যথা, অবসাদ, কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া কিংবা স্মৃতিশক্তি হ্রাস।


আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—যদি খাবারে প্রোটিন কম থাকে অথচ কার্বোহাইড্রেট বেশি থাকে, তবে ব্রেন ফগ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। আবার দিনের প্রধান খাবারের মধ্যে দীর্ঘ বিরতিও এই সমস্যার অন্যতম কারণ। চিকিৎসাবিজ্ঞানে একে অনেক সময় ভাস্কুলার ডিমেনশিয়া বলা হয়।


কীভাবে বাঁচবেন ব্রেন ফগের হাত থেকে?


বিশেষজ্ঞরা কিছু সহজ জীবনযাপনের অভ্যাস মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন—


1. প্রতিদিন ভোরে অন্তত ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করুন।


2. ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এক গ্লাস জল পান করুন।


3. অতিরিক্ত চিনি, মিষ্টিজাতীয় খাবার ও ভাজাভুজি এড়িয়ে চলুন।


4. খাবারে প্রোটিন বাড়ান, কার্বোহাইড্রেট যতটা সম্ভব কমান।


5. দিনে ৩-৪ লিটার জল পান করুন, কারণ ডিহাইড্রেশনও ব্রেন ফগের অন্যতম কারণ।


6. প্রতিদিন অন্তত ৮ ঘণ্টা গভীর ঘুম নিশ্চিত করুন।


7. নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খান এবং সকালের রোদে কিছুক্ষণ সময় কাটান।


ব্রেন ফগ হয়তো কোনও আলাদা রোগ নয়, কিন্তু এটি জীবনের মানকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার প্রতি যত্নশীল হলেই এই সমস্যার ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad