হেপাটাইটিস এক ধরনের ভাইরাসজনিত রোগ, যা মূলত লিভার বা যকৃতকে আক্রান্ত করে। এই রোগের কারণে লিভারের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট হতে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুসারে, প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হন এবং অজান্তেই গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছে যায়। তাই সময়মতো সচেতনতা ও চিকিৎসা অত্যন্ত জরুরি।
হেপাটাইটিস কী?
হেপাটাইটিস শব্দের অর্থ হলো যকৃতের প্রদাহ। এটি সাধারণত ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয়, তবে অতিরিক্ত মদ্যপান, ভেজাল খাবার, বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও হতে পারে। হেপাটাইটিস মূলত পাঁচ ধরনের— A, B, C, D ও E।
হেপাটাইটিসের লক্ষণ
শরীরে অস্বাভাবিক ক্লান্তি
জ্বর ও মাথা ব্যথা
চোখ ও ত্বক হলদেটে হয়ে যাওয়া (জন্ডিস)
প্রস্রাবের রং গাঢ় হয়ে যাওয়া
বমি ভাব বা খিদে কমে যাওয়া
পেট ফাঁপা ও ডানদিকের উপরের পেটের ব্যথা
ঘরোয়া টোটকা
হেপাটাইটিসের চিকিৎসা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে করা উচিত। তবে প্রাথমিকভাবে কিছু ঘরোয়া উপায় শরীরকে আরাম দিতে সাহায্য করতে পারে—
1. তুলসী পাতা ও মধু: প্রতিদিন সকালে তুলসী পাতা চিবিয়ে মধু খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
2. হলুদ মিশ্রিত গরম দুধ: লিভারের প্রদাহ কমাতে সহায়ক।
3. লেবু ও গরম জল: শরীর থেকে টক্সিন বের করতে কার্যকর।
4. নারকেলের জল: শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে ও লিভার পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
5. কাঁচা পেঁপের রস: হজমশক্তি ও লিভারের কার্যক্ষমতা উন্নত করে।
সমাধান ও প্রতিরোধ
সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন খাবার খেতে হবে।
বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
হেপাটাইটিস A ও B-এর টিকা সময়মতো নিতে হবে।
অতিরিক্ত মদ্যপান ও নেশাজাতীয় দ্রব্য এড়িয়ে চলা দরকার।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হেপাটাইটিস যত তাড়াতাড়ি ধরা পড়বে, তত দ্রুত নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। তাই উপসর্গ দেখা দিলেই অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন।
সতর্কীকরণ : এই প্রতিবেদনে দেওয়া তথ্য শুধুমাত্র সাধারণ সচেতনতার জন্য। এটি কোনোভাবেই চিকিৎসকের বিকল্প নয়। হেপাটাইটিস বা যেকোনো ধরনের লিভারের সমস্যা হলে অবশ্যই নিবন্ধিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
No comments:
Post a Comment