জানেন কি যদি কিডনি সম্পর্কিত কোনও সমস্যা থাকে, তাহলে এর কিছু লক্ষণ (Kidney Damage Signs) চোখেও দেখা যায়। তাই, এই লক্ষণগুলি সম্পর্কে জানা গুরুত্বপূর্ণ যাতে সময়মতো সেগুলো শনাক্ত করে চিকিৎসা করা যায়। আসুন জেনে নিই কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হলে চোখে কী কী লক্ষণ দেখা যায়।
শরীরের কোনও অংশ অসুস্থ হয়ে পড়লে, তার প্রভাব অন্যান্য অংশেও দেখা যায়। একইভাবে, কিডনির ক্ষতির কিছু লক্ষণ আমাদের চোখেও দেখা যায়। আসলে, কিডনি এমন অনেক কাজ করে, যা আমাদের চোখকেও কোনো না কোনোভাবে প্রভাবিত করে।
এই কারণেই যখন কিডনি সঠিকভাবে কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তখন এর কিছু লক্ষণ চোখেও দেখা যায়। যদি এই লক্ষণগুলি (চোখে কিডনির ক্ষতির লক্ষণ) সময়মতো শনাক্ত করা যায়, তাহলে সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে কিডনির ক্ষতি বৃদ্ধি রোধ করা সম্ভব। আসুন জেনে নিই চোখে কিডনির ক্ষতির কোন লক্ষণগুলি দেখা যায়।
চোখের চারপাশে ফোলাভাব
কিডনি যখন বিকল হয়ে যায়, তখন অতিরিক্ত তরল এবং বিষাক্ত পদার্থ শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে পারে না, যার কারণে শরীরে ফোলাভাব শুরু হয়। এই ফোলা প্রায়শই চোখের নীচে এবং মুখের উপর দেখা যায়, যাকে পেরিওরবিটাল এডিমা বলা হয়। যদি এই ফোলা দীর্ঘ সময় ধরে থাকে এবং সকালে আরও স্পষ্ট হয়, তবে এটি কিডনি সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।
চোখ লাল হওয়া
কিডনির ক্ষতির কারণে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হতে পারে, যার কারণে চোখের ছোট রক্তনালী ফেটে যেতে পারে এবং চোখ লাল দেখা দিতে শুরু করে। এ ছাড়া কিডনি ব্যর্থতার রোগীদের ক্ষেত্রেও রক্তাল্পতা দেখা দেয়, যার কারণে চোখের সাদা অংশ হলুদ বা লাল হয়ে যেতে পারে।
ঝাপসা দৃষ্টি
কিডনি রোগের কারণে শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমা হয়, যা দৃষ্টিশক্তির উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়াও, ডায়াবেটিস রোগীদের কিডনির ক্ষতির পাশাপাশি রেটিনোপ্যাথিও হতে পারে, যার ফলে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়। যদি হঠাৎ করে দেখতে সমস্যা হয়, তাহলে এটি কিডনি এবং চোখের রোগের লক্ষণ হতে পারে।
চোখে শুষ্কতা এবং চুলকানি
কিডনি বিকল হওয়ার কারণে, শরীরে ইউরিয়া এবং অন্যান্য বিষাক্ত পদার্থ বৃদ্ধি পায়, যা ত্বক এবং চোখে চুলকানি এবং শুষ্কতা সৃষ্টি করতে পারে। এই অবস্থাকে ইউরেমিক প্রুরিটাস বলা হয়। এছাড়াও, কিডনি রোগের রোগীদের ভিটামিন-এ-এর অভাবও হতে পারে, যার ফলে চোখে শুষ্কতা এবং জ্বালাপোড়া হয়।
এই লক্ষণগুলি দেখা দিলে কী করবেন?
যদি আপনি এই লক্ষণগুলির কোনওটি লক্ষ্য করেন, তাহলে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। কিডনি রোগ সনাক্ত করতে রক্ত পরীক্ষা, প্রস্রাব পরীক্ষা এবং আল্ট্রাসাউন্ড করা যেতে পারে। এছাড়াও, নিয়মিত আপনার রক্তচাপ এবং রক্তে শর্করার পরীক্ষা করান, কারণ ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ কিডনি রোগের প্রধান কারণ।
No comments:
Post a Comment