আজকের ব্যস্ত জীবনে মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো মানসিক চাপ, ঘুমের অভাব এবং দুর্বল হাড়। এমন পরিস্থিতিতে, যদি আপনি আপনার খাদ্যাভ্যাসে ছোট ছোট পরিবর্তন করেন, তাহলে স্বাস্থ্যের উপর বড় প্রভাব দেখা যেতে পারে। এই পরিবর্তনগুলির মধ্যে একটি হল কুমড়োর বীজ খাওয়া। আয়ুর্বেদ এবং আধুনিক বিজ্ঞান উভয়ই এর উপকারিতায় বিশ্বাস করে। বাগেশ্বরের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ডাঃ আইজল প্যাটেল একটি চ্যানেলে বলেন, কুমড়োর বীজ পুষ্টির ভাণ্ডার হিসেবে বিবেচিত হয়। এতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, আয়রন, প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। বিশেষ করে রাতে ভিজিয়ে রেখে খেলে শরীর অনেক উপকার পায়।
কুমড়োর বীজে ট্রিপটোফ্যান নামক একটি অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। এটি মস্তিষ্কে 'সেরোটোনিন' এবং 'মেলাটোনিন' হরমোনের মাত্রা বাড়ায়। যা ঘুম এবং মেজাজ নিয়ন্ত্রণ করে। মানসিক চাপ বা অনিদ্রায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের জন্য এর ব্যবহার খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। রাতে ঘুমানোর আগে যদি ভিজিয়ে রাখা কুমড়োর বীজ খাওয়া হয়, তাহলে ঘুমের মান উন্নত হতে পারে।
হাড়কে শক্তিশালী করে
এই বীজগুলিতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম এবং জিঙ্ক থাকে। যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। নিয়মিত সেবনে হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি পায়। এটি অস্টিওপোরোসিসের মতো সমস্যা প্রতিরোধ করে। এটি মহিলাদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী, কারণ বয়স বাড়ার সাথে সাথে তাদের হাড়ের দুর্বলতা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং ফাইবার
কুমড়োর বীজে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং ফাইবার হৃদয়কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এটি খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়ায়। এছাড়াও, ফাইবার হজম ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়। জিঙ্ক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ কুমড়োর বীজ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তারা শরীরকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে এবং দ্রুত ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে। এ ছাড়া, এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে সুস্থ এবং উজ্জ্বল করে তোলে। এটি বলিরেখা এবং অকাল বার্ধক্যের সমস্যা কমায়।
কীভাবে সেবন করবেন
কুমড়োর বীজ সারারাত ভিজিয়ে রেখে খাওয়া ভালো। এর জন্য ১ থেকে ২ চা চামচ বীজ জলে ভিজিয়ে ঘুমানোর আগে খেয়ে ফেলুন। আপনি চাইলে সকালে স্মুদি, সালাদ বা ওটসের সাথেও এটি খাওয়া যেতে পারে। যদিও এগুলি খুবই উপকারী, তবে এর অতিরিক্ত ব্যবহার পেট খারাপ করতে পারে বা ক্যালোরি বৃদ্ধি করতে পারে। তাই, এগুলি সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত (প্রতিদিন ২০-৩০ গ্রাম)। কুমড়োর বীজ একটি প্রাকৃতিক পরিপূরকের মতো, যা ঘুমের উন্নতি, মেজাজ ভালো রাখতে, হাড়কে শক্তিশালী করতে এবং হৃদরোগের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক।
No comments:
Post a Comment