ভারতের অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে জিএসটির কর কাঠামোয়। বিশ্লেষকদের মতে, এর ফলে শুধু অভ্যন্তরীণ বাজারেই নয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমেরিকার সম্ভাব্য শুল্কচাপের ধাক্কাও সামলাতে পারবে ভারত।
ভারতের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল
আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা বিএমআই জানিয়েছে, চলতি দশকের শেষে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গড়ে ৬ শতাংশের কিছু বেশি থাকবে। যদিও ২০১০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বৃদ্ধির হার ছিল গড়ে ৬.৫ শতাংশ। কোভিড মহামারীর ধাক্কায় কিছুটা গতি কমলেও, এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত এগোনো অর্থনীতির নাম এখনও ভারতই। আগামী পাঁচ বছরে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার আরও বাড়বে বলেই সংস্থার দাবি।
ট্রাম্পের শুল্ক বনাম ভারতের প্রস্তুতি
বিএমআই-র পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে ভারতের অর্থনীতিতে ধাক্কা লাগতে পারে। তবে সর্বশেষ সমীক্ষায় তারা জানিয়েছে, জিএসটির নতুন সংস্কার সেই আঘাত অনেকটাই সামলাতে সক্ষম হবে। ২০২4-25 অর্থবর্ষে ভারতের প্রবৃদ্ধি ৫.৮ শতাংশ এবং পরের অর্থবর্ষে ৫.৪ শতাংশে দাঁড়াবে বলে অনুমান করা হয়েছে।
জিএসটির নতুন কাঠামো
নতুন ব্যবস্থায় কর স্ল্যাবে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে—
১২ শতাংশের স্ল্যাব বাতিল করে তার আওতাধীন প্রায় সব পণ্যকে ৫ শতাংশে নামানো হচ্ছে।
২৮ শতাংশ স্ল্যাবের আওতাধীন প্রায় ৯০ শতাংশ পণ্য সরিয়ে ১৮ শতাংশে আনা হচ্ছে।
ফলে কার্যত চারটি কর স্ল্যাব (৫, ১২, ১৮, ২৮) কমে গিয়ে দুটি মূল স্ল্যাব (৫ এবং ১৮ শতাংশ) বহাল থাকবে।
বেশিরভাগ পরিষেবা আসবে এই নতুন দুটি স্ল্যাবের আওতায়।
কেন গুরুত্বপূর্ণ এই সংস্কার?
এসবিআইয়ের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, জিএসটির এই পরিবর্তনের ফলে ভোগব্যয় প্রায় ৫.৩১ লক্ষ কোটি টাকা বাড়তে পারে। বাজারে ক্রেতাদের চাপ বাড়লে উৎপাদনশীলতা ও কর্মসংস্থানও বৃদ্ধি পাবে।
বিশেষজ্ঞদের মত
অর্থনীতিবিদদের মতে, কর কাঠামোর এই সরলীকরণ ভারতের বাজারকে প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে। পাশাপাশি আমদানি পণ্যের উপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির যে প্রভাব পড়ার কথা, তা অনেকটাই কমে যাবে। ফলে দেশের অর্থনীতি আরও স্থিতিশীল থাকবে এবং এশিয়ার অন্যতম দ্রুত-বর্ধনশীল অর্থনীতি হিসেবে ভারতের অবস্থান অটুট থাকবে।
No comments:
Post a Comment