রাশিয়ান তেল কেনা ‘সুযোগবাদী’—ভারতের বিরুদ্ধে মার্কিন উপদেষ্টার বিস্ফোরক অভিযোগ - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Tuesday, August 19, 2025

রাশিয়ান তেল কেনা ‘সুযোগবাদী’—ভারতের বিরুদ্ধে মার্কিন উপদেষ্টার বিস্ফোরক অভিযোগ

 


ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক নতুন করে সংকটে পড়ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো সরাসরি ভারতকে সতর্ক করে বলেছেন, নয়াদিল্লি যদি রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠ হয়, তাহলে তার ফল ভোগ করতে হবে। শুধু তাই নয়, তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আমেরিকা ভারতকে সবচেয়ে বড় ক্ষতি করবে মার্কিন বাজারে প্রবেশাধিকার সীমিত করে।


শুল্কের বোঝা বাড়ছে


ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০% পর্যন্ত আমদানি শুল্ক বসিয়েছে। এর মধ্যে বিশেষ করে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার কারণে ২৫% অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এই নতুন শুল্ক ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। এর ফলে ভারতীয় রপ্তানি মার্কিন বাজারে আরও ব্যয়বহুল হয়ে পড়বে।


নাভারোর অভিযোগ

ফিনান্সিয়াল টাইমসে প্রকাশিত এক মতামত প্রবন্ধে নাভারো লিখেছেন—

ভারত রাশিয়া থেকে সস্তায় অপরিশোধিত তেল কিনছে।

সেই তেল পরিশোধন করে অন্যান্য দেশে বেশি দামে বিক্রি করছে।

এতে রাশিয়ার ডলার আয় বাড়ছে, আর সেটি ইউক্রেন যুদ্ধে মস্কোর অর্থায়নকে সাহায্য করছে।তার মতে, এই কাজ “সুযোগবাদী” এবং এটি পুতিনের যুদ্ধ অর্থনীতিকে বিচ্ছিন্ন করার বিশ্ব প্রচেষ্টাকে দুর্বল করছে। নাভারো আরও বলেছেন, ভারত যদি সত্যিই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে থাকতে চায়, তবে তাকে সেই অনুযায়ী আচরণ করতে হবে।

কূটনৈতিক পটভূমি

এই মন্তব্যগুলি এসেছে এক সংবেদনশীল সময়ে।

আগস্টের শেষের দিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চীনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং–এর বৈঠক নির্ধারিত রয়েছে।

তার আগে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই নয়াদিল্লি সফরে আসছেন, যেখানে বিতর্কিত সীমান্ত ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে।

এরই মধ্যে মার্কিন বাণিজ্য আলোচকরা ২৫–২৯ আগস্টের ষষ্ঠ দফা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করেছেন।

মার্কিন হুঁশিয়ারির তাৎপর্য

নাভারোর বক্তব্য স্পষ্ট করে দিচ্ছে—ওয়াশিংটন ভারতের বাড়তে থাকা রাশিয়া ও চীন ঘনিষ্ঠতাকে ভালো চোখে দেখছে না। আমেরিকার মতে, ভারত এভাবে চলতে থাকলে শুধু বাণিজ্যেই নয়, উন্নত সামরিক প্রযুক্তি ভাগাভাগিতেও বড় সমস্যা তৈরি হবে। কারণ, যে দেশ রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে এতটা ঘনিষ্ঠ, তার সঙ্গে সংবেদনশীল প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ভাগ করা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে কঠিন হবে।

সামনে কী?

বর্তমানে ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো—

একদিকে রাশিয়ার সস্তা অপরিশোধিত তেল কেনার অর্থনৈতিক সুবিধা,

অন্যদিকে আমেরিকার চাপ ও শুল্কবৃদ্ধির বাণিজ্যিক ক্ষতি।

এই দ্বন্দ্বের মাঝেই ভারতকে কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।


No comments:

Post a Comment

Post Top Ad