প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ০৯ আগস্ট ২০২৫, ১১:০০:০১ : দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্যের শ্রী পদ্মনাভস্বামী মন্দির আবারও শিরোনামে উঠে এসেছে। সম্প্রতি মন্দির প্রশাসনের এক বৈঠকে ‘খ’ ভল্ট খোলার প্রসঙ্গ তোলা হয়। এই প্রস্তাবটি দেন রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি এম. ভেলাপ্পান নায়ার। ধারণা করা হয়, এই ভল্টে বিপুল ধনসম্পদ লুকিয়ে আছে, কিন্তু আজও কেউ এটি খোলেনি। বৈঠকে উপস্থিত অন্যান্য সদস্যরা এ বিষয়ে কোনও স্পষ্ট মত দেননি। বিশেষ বিষয় হল, এত বড় সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী মন্দিরের প্রধান পুরোহিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। মন্দিরের ভল্ট A এবং B একটি বিশেষ কোণে অবস্থিত, যা শ্রী পদ্মনাভস্বামীর মূর্তির মাথার কাছে বলে মনে করা হয়।
২০১১ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট মন্দিরের ভল্টগুলির তালা খোলার নির্দেশ দেয়। সেই সময় ভল্ট A খোলা হয় এবং এর ভেতর থেকে সোনা ও রূপার পাত্র, রত্নখচিত মূর্তি, সিংহাসনসহ অমূল্য সামগ্রী পাওয়া যায়। এগুলোর আনুমানিক মূল্য ছিল ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। মোট ৬টি ভল্ট চিহ্নিত হয়েছিল – A, B, C, D, E এবং F। তবে ভল্ট B স্থানীয় ধর্মীয় বিশ্বাস ও আশঙ্কার কারণে তখনও বন্ধ রাখা হয়েছিল।
ভল্ট B নিয়ে বহু গল্প প্রচলিত আছে। বলা হয়, এটি ঐশ্বরিক শক্তি ও সাপ দ্বারা সুরক্ষিত। বিশ্বাস করা হয়, জোর করে এই দরজা খোলার চেষ্টা বিপর্যয় ডেকে আনবে। আরও ধারণা আছে, এই দরজাটি কেবলমাত্র এমন একজন বিদ্বান পুরোহিতই খুলতে পারবেন, যার গরুড় মন্ত্রে পূর্ণ জ্ঞান রয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এমন কেউ সামনে আসেননি, তাই ভল্ট B আজও অক্ষত রয়েছে।
শ্রী পদ্মনাভস্বামী মন্দিরের ইতিহাস ৮ম শতাব্দী পর্যন্ত প্রসারিত। বর্তমান জাঁকজমকপূর্ণ রূপটি ১৮শ শতকে ত্রাভাঙ্কোরের রাজা মার্থান্ড বর্মা নির্মাণ করেন। মন্দিরের স্থাপত্যে কেরালা ও দ্রাবিড় শৈলীর অপূর্ব মিশ্রণ দেখা যায়। এখানে শেষনাগের উপর শায়িত ভগবান বিষ্ণুর একটি বিশাল মূর্তি রয়েছে, যা নেপালের গণ্ডকী নদী থেকে আনা শালিগ্রাম পাথরে নির্মিত।
১৮ ফুট লম্বা এই মূর্তিকে একসাথে তিনটি দরজা দিয়ে দেখা যায়—মাথা, নাভি ও পায়ের দিক থেকে। এই অনন্য বৈশিষ্ট্য মন্দিরটিকে আরও বিশেষ করে তুলেছে।
এরপর কী?
ভল্ট B সম্পর্কিত নতুন প্রস্তাব আবারও মানুষের কৌতূহল বাড়িয়েছে। এখন প্রশ্ন হল—শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বন্ধ থাকা এই রহস্যময় ভল্ট কি কখনও খোলা হবে, নাকি এটি চিরকাল রহস্যে ঘেরা থেকে যাবে?
No comments:
Post a Comment