প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ২৭ আগস্ট ২০২৫, ০৯:০০:০১ : রান্নাঘরে হঠাৎ ফুটন্ত দুধ উথলে পড়াকে অশুভ লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে আসছে। প্রাচীন প্রজন্ম থেকে এই বিশ্বাস চলে আসছে যে, দুধ যখন উথলে পড়ে বা ফুটে চুলায় পড়ে যায়, তখন তা ঘরে অবাঞ্ছিত ঝামেলা এবং অশান্তির ইঙ্গিত দেয়। প্রবীণরা বলেন যে, দুধ ঝরে পড়া কলহ, বিবাদ এবং অর্থের ক্ষতির লক্ষণ হতে পারে। তাই, বাড়িতে দুধ ফুটানোর সময় সর্বদা সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। দুধকে যেমন পবিত্র এবং অমৃতের মতো মনে করা হয়, তেমনি এর অপমান করা অশুভ ফল দেয় বলে মনে করা হয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক এর পিছনে আসল কারণ কী।
সংবাদ মাধ্যমের সাথে কথোপকথনে মহন্ত স্বামী কামেশ্বরানন্দ বেদান্তচার্য জানিয়েছেন যে গ্যাসের চুলা হোক বা পুরনো দিনের মাটির চুলা, দুধ উথলে পড়াকে বাস্তু দোষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি বলেন, গরু, মহিষ, ছাগল বা যেকোনও প্রাণীর দুধ কখনই মাটিতে পড়া উচিত নয় এবং পা স্পর্শ করতে দেওয়া উচিত নয়। দুধ এবং দইয়ের মতো জিনিসপত্র সর্বদা সম্মানের সাথে রাখা উচিত। স্বামী কামেশ্বরানন্দ বলেন যে, পূর্বকালে মানুষ দই বা দুধের অবশিষ্ট অংশ জলে মিশিয়ে পান করতো যাতে তা অপবিত্র না হয়। তিনি বলেন, ফুটন্ত দুধ উথলে পড়লে ঘরের সুখ, সমৃদ্ধি এবং শান্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
রামায়ণের উদ্ধৃতি দিয়ে স্বামী কামেশ্বরানন্দ বলেন যে, লঙ্কায় প্রবেশের সময় হনুমানজি রাবণের দইয়ের পাত্র দেখে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, যে ব্যক্তি এটিকে অক্ষত রেখে যাবে তার মৃত্যু হবে। এই কারণেই প্রাচীন গ্রন্থে দুধ বা দই অক্ষত রেখে যাওয়াকে অশুভ এবং মৃত্যুর লক্ষণ বলে মনে করা হয়।
স্বামী কামেশ্বরানন্দ আরও বলেন যে, দুধ, দই এবং ঘি কে গরুর রস বলা হয় এবং অমৃত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাস্তুশাস্ত্রে এই তিনটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে এবং তাদের অপমান ঘরের সুখ ও সমৃদ্ধির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। দুধ, তা যে প্রাণীরই হোক না কেন, মায়ের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। এই কারণেই আজও সমাজে "মা কা দুধ পিয়া হ্যায় তো..." এর মতো কথা শোনা যায়।
স্বামী কামেশ্বরানন্দ বলেন, দুধ কেবল পুষ্টির উৎসই নয়, বরং বিশ্বাস ও পবিত্রতার প্রতীকও। দুধ উথলে পড়া বা এর অসম্মান করা ঘরের সুখ, সমৃদ্ধি এবং শান্তিকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই, আজও মানুষ বাড়িতে দুধ ফুটানোর সময় বিশেষ যত্ন নেয় যাতে এই অমৃত-সদৃশ পানীয়টির অসম্মান না হয়।
No comments:
Post a Comment