প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ২৩ আগস্ট ২০২৫, ০৮:০০:০১ : সনাতন ধর্মে এমন অনেক নিয়ম রয়েছে যেগুলো প্রজন্মের পর প্রজন্ম মেনে আসা হয়েছে। তবে অনেক রীতির পেছনের আসল যুক্তি অনেকেরই জানা নেই। এরকমই একটি প্রচলিত বিশ্বাস হলো—কখনও কারও থালায় একসঙ্গে তিনটি রুটি পরিবেশন করা উচিত নয়। ছোটবেলায় অনেকেই দেখেছেন, বাড়ির মায়েরা বা দিদিমা এই কাজ করতে নিষেধ করতেন। অনেক সময় বড়রা হাসতে হাসতে বলতেন, “তিন তিগাড়া কাজ বিগাড়া”, কিন্তু এর আসল মানে কী? চলুন জেনে নেওয়া যাক, শাস্ত্র ও প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী কেন তিন রুটি অশুভ বলে মনে করা হয়।
হিন্দু ধর্মের মতে, জীবিত ব্যক্তির থালায় কখনও তিনটি রুটি রাখা শুভ নয়। কারণ, মৃত্যুর পর যে থালা মৃতব্যক্তির নামে সাজানো হয়, সেখানে তিনটি রুটি দেওয়ার রীতি আছে। বিশ্বাস করা হয়, এই রুটিগুলোর মাধ্যমে মৃত আত্মার ক্ষুধা নিবারণ হয় এবং তার মোক্ষ লাভ সহজ হয়। তাই জীবিত কারও থালায় একই নিয়ম পালনকে অশুভ ধরা হয়।
অঙ্কশাস্ত্র অনুযায়ী সংখ্যাটি ৩ অনেক ক্ষেত্রে শুভ নয় বলে ধরা হয়। অনেকের মতে, এই সংখ্যা নেগেটিভ এনার্জি বা নেতিবাচক শক্তি বহন করে। তাই নতুন কাজ বা শুভ অনুষ্ঠানে তিন সংখ্যাকে এড়িয়ে চলার রীতি বহু প্রাচীন।
আরেকটি প্রচলিত ধারণা হলো, কারও থালায় যদি তিনটি রুটি পরিবেশন করা হয়, তাহলে অজান্তেই তার ও পরিবেশনকারীর মধ্যে মনোমালিন্য বা শত্রুতা জন্ম নিতে পারে। যদিও এ বিশ্বাস পুরোপুরি লোকাচার নির্ভর, তবুও বহু পরিবার আজও এই নিয়ম মানেন।
স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও তিন রুটিকে বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হয় না। ডায়েটিশিয়ানদের মতে, সাধারণভাবে একজন প্রাপ্তবয়স্কের জন্য একবেলায় দুই রুটি যথেষ্ট। তিন রুটি খেলে অনেকের হজমে সমস্যা হতে পারে।
অতএব দেখা যাচ্ছে, এই প্রাচীন নিয়মটির পেছনে রয়েছে ধর্মীয় আচার, সংখ্যাতত্ত্ব, সম্পর্কের মানসিক প্রভাব ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞান সব কিছুরই কিছুটা সংযোগ। এজন্যই আজও অনেক পরিবারে একসঙ্গে তিন রুটি পরিবেশনকে এড়িয়ে চলা হয়।
No comments:
Post a Comment