প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ২২ আগস্ট ২০২৫, ১০:০০:০১ : হিন্দু ধর্মে ঈশ্বরের প্রতিটি রূপের সঙ্গেই বিশেষ প্রতীক জড়িয়ে আছে। যেমন শিবের সঙ্গে ত্রিশূল, বিষ্ণুর সঙ্গে শঙ্খ ও চক্র, তেমনই গণেশের সঙ্গেও রয়েছে কিছু বিশেষ প্রতীক, ভাঙা দাঁত, বাহন ইঁদুর, বড় কান ইত্যাদি। কিন্তু এর পাশাপাশি আরও একটি জিনিস আছে, যা গণপতির পরিচয় হয়ে উঠেছে তাঁর অতি প্রিয় ভোগ মোদক।
পৌরাণিক কাহিনিতে ভগবান গণেশ ও মোদকের সম্পর্কের বহু উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে মুদ্গল পুরাণ, গণপতি অথর্বশীর্ষ, স্কন্দ পুরাণ ইত্যাদি গ্রন্থে মোদকের মাহাত্ম্যকে কেবল এক ধরনের মিষ্টির প্রতি ভালোবাসা হিসেবে দেখা হয়নি। বরং এর মধ্যে লুকিয়ে আছে মানব জীবনের জন্য গভীর শিক্ষা। আসুন, গণেশ চতুর্থী ২০২৫-এর বিশেষ দিনে জেনে নিন, কেন ভগবান গণেশের কাছে মোদক এত প্রিয় এবং এর অন্তর্নিহিত বার্তা কী।
জীবনের কঠিনতার মাঝেও আনন্দের প্রতীক
মুদ্গল পুরাণে গণেশকে বলা হয়েছে ‘মোদকপ্রিয়’, অর্থাৎ মোদকপ্রেমী। এখানে মোদক বলতে শুধু সুস্বাদু মিষ্টি বোঝানো হয়নি। বরং মোদকের বাইরের শক্ত ও সাদামাটা আবরন প্রতীক জীবনের সংযম, পরিশ্রম ও কঠোরতা, আর ভেতরের মিষ্টি পুর (নারকেল ও গুড়) প্রতীক আত্মিক জ্ঞান ও আনন্দের। অর্থাৎ জীবন যতই কঠিন হোক না কেন, তার ভেতরে লুকিয়ে থাকে আনন্দের স্বাদ যা ভগবান গণেশ ভক্তকে উপলব্ধি করান।
জ্ঞানের প্রতীক মোদক
গণপতি অথর্বশীর্ষে বলা হয়েছে "ত্বমেব প্রত্যক্ষং তত্ত্বমসিঃ" অর্থাৎ আপনিই একমাত্র সত্য। এখানে মোদক প্রতীক জ্ঞান, পুষ্টি, মাধুর্য ও মুক্তির। ভগবান গণেশ মোদক ভোগ করেন, আবার ভক্তদের প্রসাদ হিসেবে তা বিলিয়ে দেন। এর গভীর অর্থ হল জ্ঞানকে নিজের মধ্যে আবদ্ধ না রেখে ভাগ করে নেওয়া উচিত। জ্ঞান হল প্রসাদের মতো, যা দেওয়া এবং গ্রহণ করার মধ্যেই তার প্রকৃত মূল্য।
আনন্দ মানে কাল নয়, আজ
গণেশের মোদকের প্রতি ভালবাসা মানুষের জীবনে এক বড় শিক্ষা দেয় আনন্দকে বিলাসিতা ভেবে কালকের জন্য ফেলে রাখা ভুল। সত্যিকারের আনন্দ আসে জ্ঞান, শৃঙ্খলা ও আত্মিক উপলব্ধি থেকে। অর্থাৎ সুখ পেতে ভবিষ্যতের অপেক্ষা নয়, আজ থেকেই তাকে উপলব্ধি করতে হবে।
গণেশ চতুর্থীর এই বিশেষ দিনে মনে রাখুন ভগবান গণেশ যেমন মোদকপ্রিয়, তেমনই তিনি শিখিয়ে দেন যে জীবনের আসল মাধুর্য লুকিয়ে আছে জ্ঞান, সংযম ও আত্মিক আনন্দের মধ্যে।
No comments:
Post a Comment