লাইফস্টাইল ডেস্ক, ১১ আগস্ট ২০২৫: বর্ষাকালে অপ্রত্যাশিত বৃষ্টি, তাপ এবং আর্দ্রতা ত্বকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। বর্ষাকালে ক্রমাগত ঘাম ত্বকের সমস্যা বাড়ায়। এই ঋতুতে ত্বকের রোগ, সংক্রমণ এবং জ্বালাপোড়ার ঝুঁকিও চারগুণ বেড়ে যায়। বাতাসে উপস্থিত আর্দ্রতা ত্বকে ঘাম এবং তেল নিঃসরণ বৃদ্ধি করে।
শুধু তাই নয়, এই ঋতুতে ত্বকের মৌলিক প্রকৃতিও ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। উচ্চ আর্দ্রতার কারণে স্বাভাবিক ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায় এবং তৈলাক্ত ত্বক আরও তেল উৎপাদন শুরু করে। অন্যদিকে, যদি আপনার ত্বক শুষ্ক প্রকৃতির হয়, তাহলে এই আর্দ্র ঋতুতে এর সাথে সম্পর্কিত সমস্যাগুলিও বৃদ্ধি পায়। অতিরিক্ত ঘামের কারণে, এই ঋতুতে ত্বক বারবার ভিজে যায় এবং পরে শুকিয়ে যায়। এর কারণে, শুষ্ক হওয়ার ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
এই ঋতুতে ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকিও বেশি থাকে। আর্দ্রতার কারণে অনেকের ফুসকুড়ি এবং দাদ হয়, ত্বক বর্ণহীন হয়ে যায়। অন্যদিকে, তৈলাক্ত ত্বকের লোকদের এই ঋতুতে ব্রণ হয়। অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে তাঁদের ত্বকের রঙও কালো হয়ে যায়। ত্বকের ওপর আর্দ্রতার প্রভাব নিরপেক্ষ করতে, কিছু জিনিস চেষ্টা করতে পারেন।
এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন -
১) আপনার মুখ যখনই ঘামে ভিজে যাবে, টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে ফেলুন। যদি ত্বক শুষ্ক মনে হয়, তাহলে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার লাগান।
২) প্রতিদিন পরিষ্কার জল দিয়ে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিন এবং পাঁচ থেকে দশ মিনিট ধরে মুখে বরফের টুকরো ঘষুন। এটি করলে কেবল ঘাম কমবে না, আর্দ্রতার কারণে ব্রণও প্রতিরোধ হবে।
৩) মুখ চকচকে এবং মসৃণ রাখতে, ত্বকের ওপর অতিরিক্ত তেল জমে না থাকা গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য নিয়মিত মুলতানি মাটিতে গোলাপ জল মিশিয়ে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করুন এবং মুখে লাগান। শুকিয়ে যাওয়ার পর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। বেসন এবং দই দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাকও এই ঋতুতে কার্যকর। আপনি যদি চান, আপনি এই ঋতুতে আপনার মুখে চন্দনের পেস্টও লাগাতে পারেন।
৪) এই অতি আর্দ্র ঋতুতে সানস্ক্রিনযুক্ত ফেস পাউডার ব্যবহার করুন। এটি কেবল আপনার ত্বককে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি থেকে রক্ষা করবে না বরং মুখের ওপর আবহাওয়ার প্রভাব কমিয়ে মুখে দাগ পড়া রোধ করবে। এর নিয়মিত ব্যবহার ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে।
৫) বর্ষাকালে বায়ুমণ্ডলে আর্দ্রতার মাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে মুখ থেকে বাষ্পীভবন কমে যায়, তাই এই ঋতুতে যতবার সম্ভব জল দিয়ে মুখ ধোয়া উচিৎ। ঘন ঘন মুখ ধোয়ার ফলে ত্বকের আর্দ্রতা নষ্ট হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে মুখ ধোয়ার পর ময়েশ্চারাইজার লাগাতে ভুলবেন না। তৈলাক্ত ত্বকের লোকেদের নিয়মিত ক্লিনজার ব্যবহার করা উচিৎ, কারণ এই ঋতুতে ত্বকে ধুলো জমে যায় এবং ছিদ্রগুলি বন্ধ হয়ে যায়।
৬) মেঘলা থাকলেও অথবা বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও সানস্ক্রিন লাগান। প্রায়শই মানুষ এই ঋতুতে সানস্ক্রিন লাগানোর প্রয়োজন মনে করে না, তবে বর্ষাকালে জলরোধী সানস্ক্রিন লাগানো প্রয়োজন। স্বাভাবিক ত্বকের লোকেদের উচ্চ এসপিএফযুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিৎ এবং তৈলাক্ত ত্বকের লোকেদের খনিজ ফিলারযুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিৎ।
৭) বর্ষাকালে বাতাসে জলবাহিত জীবাণুর সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে, একটি ভালো অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল টোনার ত্বকের সংক্রমণ এবং আবহাওয়ার প্রতিকূল প্রভাব প্রতিরোধে সাহায্য করে। মুখ পরিষ্কার করতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ফেস ওয়াশ ব্যবহার করুন। নিয়মিত ত্বকে টোনার ব্যবহার করুন। শুষ্ক ত্বকের লোকেদের পাঁচ ফোঁটা ক্যামোমাইল তেল এবং এক চা চামচ তাজা দুধ মিশিয়ে ত্বকে লাগান। অন্যদিকে তৈলাক্ত ত্বকের লোকেদের দশ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেল এবং এক চা চামচ জল মিশিয়ে তৈরি টোনার ব্যবহার করা উচিৎ।
আর হ্যাঁ ত্বকে নতুন কিছু ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট অবশ্যই করে নিন। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিন।
No comments:
Post a Comment