কলকাতা, ২২ আগস্ট ২০২৫, ২১:৪৫:০১ : বিহারের সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার পৌঁছলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায়। জেসোর রোড মেট্রো স্টেশন থেকে তিনি একসঙ্গে তিনটি মেট্রো পরিষেবার উদ্বোধন করেন— নোয়াপাড়া–জয় হিন্দ বিমানবন্দর মেট্রো, শিয়ালদহ–এসপ্ল্যানেড মেট্রো এবং বেলেঘাটা–হেমন্ত মুখোপাধ্যায় মেট্রো রুট। এরপর তিনি বিপুল জনসমাগমের মধ্যে এক জনসভায় বক্তব্য রাখেন। সভামঞ্চের চারপাশ ছিল কানায় কানায় ভর্তি, অনেকে বাইরে দূরদর্শনের ওবি ভ্যানের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর ভাষণ শোনেন।
মোদী তাঁর ভাষণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান। তিনি দাবী করেন, “এইবার ঠিক হয়েছে— বাংলায় তৃণমূল যাবে, বিজেপি আসবে।” তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল–কংগ্রেসসহ কিছু রাজনৈতিক দল তুষ্টিকরণের রাজনীতি করছে, ভোটের লোভে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে বিশাল অভিযান শুরু করেছি। যারা দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি, তাদের এদেশে থাকার অধিকার নেই। এই জাতীয় সংকটের বিষয়ে বারবার বাংলার মানুষকে সচেতন করছি।”
সভায় মোদী স্মরণ করেন বিজেপির অন্যতম প্রেরণাস্থল ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মজয়ন্তীর ১২৫তম বর্ষ। তিনি বলেন, “ড. মুখোপাধ্যায় ছিলেন দেশের প্রথম শিল্পমন্ত্রী এবং ভারতের প্রথম শিল্পনীতির রূপকার। দুর্ভাগ্যবশত কংগ্রেস কখনও তাঁর প্রাপ্য সম্মান দেয়নি। যদি সেই নীতিতে দেশ এগোত, তাহলে ভারতের ছবি আজ অন্যরকম হতো।”
মোদীর বক্তব্য, “পশ্চিমবঙ্গ দেশের অন্যতম জনবহুল রাজ্য। বাংলার ক্ষমতা না বাড়লে উন্নত ভারতের যাত্রা সম্পূর্ণ হবে না। বিজেপি বিশ্বাস করে বাংলার উদয়েই উন্নত ভারতের ভিত্তি রচিত হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বিজেপি যে প্রতিশ্রুতি দেয় তা পালন করে। এর সাম্প্রতিক উদাহরণ অপারেশন সিন্দূর। আমাদের সেনারা সীমাপার সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি ধ্বংস করেছে। পাকিস্তান আজও তার ধাক্কায় আতঙ্কে রয়েছে।”
দুর্গাপুজোর প্রস্তুতির সময়ে কলকাতায় আসা প্রসঙ্গে মোদী বলেন, “আস্থা ও আনন্দের উৎসব যখন উন্নয়নের উৎসবের সঙ্গে মিলে যায়, তখন আনন্দ দ্বিগুণ হয়।” তিনি জানান, মেট্রো ও হাইওয়ে সংক্রান্ত একাধিক বৃহৎ প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধনের সুযোগ পেয়েছেন।
মোদীর কথায়, “কলকাতা ও দমদমের মতো শহরগুলো ভারতের ঐতিহ্য ও ভবিষ্যতের সমৃদ্ধ পরিচয় বহন করে। আজ যখন ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়ার পথে, তখন এই শহরগুলির ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ।”
No comments:
Post a Comment