প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ০৮ আগস্ট ২০২৫, ০৮:০০:০২ : বিশ্ব কে নাথের উদ্দেশ্যে নিবেদিত শ্রাবণ মাস এখন তার শেষ দিনের দিকে এগিয়ে চলেছে। কিন্তু এখনও দেশ ও বিশ্বের প্রতিটি শিব মন্দিরে হর হর মহাদেব এবং বল বামের প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে। দেশের প্রতিটি শিব মন্দিরের মধ্যেই ভক্তি ও বিস্ময়ের গল্প রয়েছে। তেলঙ্গানার নালগোন্ডা জেলায় এমনই একটি শিব মন্দির অবস্থিত, যা কেবল ভক্তির গল্পই বর্ণনা করে না, বরং অবাকও করে। মন্দিরটির নাম ছায়া সোমেশ্বর, যেখানে মহাদেবের ছায়া দেখা যায়। মন্দির সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তেলঙ্গানা পর্যটন বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়।
পর্যটন বিভাগের মতে, একাদশ-দ্বাদশ শতাব্দীর এই শিব মন্দিরটি কেবল একটি আধ্যাত্মিক কেন্দ্রই নয়, বিজ্ঞান ও শিল্পের জীবন্ত প্রমাণও। হায়দ্রাবাদ থেকে ১০৪ কিলোমিটার এবং নালগোন্ডা বাস স্টেশন থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে পানাগলে অবস্থিত এই মন্দিরটি চোল রাজবংশ দ্বারা নির্মিত। মন্দিরটির নাম ছায়া সোমেশ্বর রাখা হয়েছিল কারণ এখানকার একটি স্তম্ভের ছায়া সারা দিন ধরে শিবলিঙ্গের উপর পড়ে। এই ছায়া রহস্য ও বিস্ময়ের কেন্দ্রবিন্দু।
এই ছায়া আসলে কোনও একটি স্তম্ভের নয়, বরং গর্ভগৃহের সামনে স্থাপিত চারটি স্তম্ভ থেকে আলোর প্রতিফলনের ফলে তৈরি একটি অন্ধকার অঞ্চল। এই স্তম্ভগুলি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে সূর্যের অবস্থান পরিবর্তন হওয়া সত্ত্বেও, শিবলিঙ্গের উপর ছায়া স্থির থাকে। এটি স্থপতিদের বৈজ্ঞানিক বোধগম্যতা এবং সৃজনশীলতার এক অতুলনীয় উদাহরণ। মন্দির প্রাঙ্গণে তিনটি গর্ভগৃহ রয়েছে, যা ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং শিবকে উৎসর্গীকৃত। তিনটিই বিভিন্ন দিকে মুখ করে একটি সাধারণ মহামণ্ডপের সাথে সংযুক্ত।
দেওয়ালে রামায়ণ এবং মহাভারতের পর্বের ত্রাণ ভাস্কর্যগুলি মন্দিরের দেওয়াল এবং স্তম্ভগুলিতে জটিলভাবে খোদাই করা হয়েছে, যা শিল্পপ্রেমীদের আকর্ষণ করে। কমপ্লেক্সে নির্মিত একটি জাদুঘরও দেখার মতো, যেখানে ইয়েলেশ্বরম গ্রাম থেকে প্রাপ্ত প্রাচীন শিবলিঙ্গ এবং অন্যান্য ভাস্কর্য সংরক্ষিত আছে। এই ভাস্কর্যগুলি সেই সময়ের যখন নিকটবর্তী পাচালা রামলিঙ্গেশ্বর মন্দির ডুবে গিয়েছিল। ছায়া সোমেশ্বর মন্দির থেকে ১.২ কিমি দূরে অবস্থিত রামলিঙ্গেশ্বর মন্দির ভক্তদের জন্য আরেকটি আকর্ষণ। শ্রাবণ এবং মহাশিবরাত্রি ছাড়াও, অন্যান্য বিশেষ দিনেও ভক্তরা এই স্থানে ভিড় করেন, যারা এই মন্দিরের ছায়ার রহস্য এবং এর ঐতিহাসিক মহিমা দেখতে আসেন।
No comments:
Post a Comment