নারীদের মধ্যে ক্রমশ বাড়ছে এক মারাত্মক রোগ—গর্ভাশয় মুখের ক্যান্সার। চিকিৎসা পরিসংখ্যান বলছে, ভারতে প্রতি বছর লক্ষাধিক নারী এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং অনেক ক্ষেত্রেই প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত না হওয়ায় মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে। অথচ সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নিলে এই ক্যান্সার এড়ানো সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভাশয় মুখের ক্যান্সারের প্রধান কারণ মানব প্যাপিলোমা ভাইরাস বা এইচপিভি (HPV) সংক্রমণ। সাধারণত যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায়। সব সময় সংক্রমণ ক্যান্সারে রূপ নেয় না, তবে দীর্ঘদিন অচিকিৎসিত থাকলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
লক্ষণ হিসেবে অনিয়মিত ঋতুস্রাব, যৌনমিলনের পর রক্তপাত, কোমর বা তলপেটে স্থায়ী ব্যথা দেখা দিতে পারে। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায়ই কোনও স্পষ্ট উপসর্গ দেখা যায় না, যার ফলে রোগ দেরিতে ধরা পড়ে। তাই নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি।
প্রতিরোধে সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হলো এইচপিভি টিকা। চিকিৎসকদের মতে, ৯–১৪ বছর বয়সি কিশোরী এবং ২৬ বছর পর্যন্ত তরুণীদের জন্য এই টিকা অত্যন্ত কার্যকর। এমনকি ৪৫ বছর বয়স পর্যন্ত মহিলাদেরও টিকা নেওয়া যেতে পারে ডাক্তারি পরামর্শে। পাশাপাশি নিয়মিত প্যাপ টেস্ট (Pap Smear) করলে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত করা সম্ভব।
চিকিৎসকরা বলছেন, সুস্থ জীবনযাপনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ধূমপান ও মদ্যপান এড়ানো, পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা গর্ভাশয় মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটাই কমাতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের একবাক্যে মত, সময়মতো টিকা ও নিয়মিত পরীক্ষা—এই দুই অস্ত্রই নারীদের গর্ভাশয় মুখের ক্যান্সার থেকে সুরক্ষা দিতে পারে।
No comments:
Post a Comment