‘মস্তিষ্ক খেকো অ্যামিবা’ বা Naegleria fowleri এক ধরনের বিরল কিন্তু ভয়ঙ্কর জীবাণু। এটি আসলে একটি মুক্তজীবী অ্যামিবা, যা সাধারণত উষ্ণ ও দূষিত জলে জন্মায়। নাকে দিয়ে শরীরে প্রবেশ করলে এই অ্যামিবা স্নায়ুর মাধ্যমে সরাসরি মস্তিষ্কে পৌঁছে যায় এবং সেখানেই ভয়ঙ্কর সংক্রমণ ঘটায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই রোগকে বলা হয় Primary Amoebic Meningoencephalitis (PAM)।
কিভাবে হয়?
গরম বা দূষিত পুকুর, লেক, সুইমিং পুল কিংবা ট্যাপের অপরিষ্কার জলে এই অ্যামিবার উপস্থিতি বেশি দেখা যায়।
সাধারণত স্নান করার সময় বা নাক দিয়ে জল উঠলে অ্যামিবা শরীরে ঢোকে।
এটি মুখ দিয়ে ঢুকলে কোনো সমস্যা হয় না, কেবল নাক দিয়েই বিপদ ডেকে আনে।
কেন ভয়ঙ্কর?
শরীরে প্রবেশের পর দ্রুত মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রচণ্ড মাথাব্যথা, জ্বর, বমি, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া এবং মানসিক বিভ্রান্তি দেখা দেয়।
মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই মৃত্যুঝুঁকি তৈরি হয়। মৃত্যুর হার ৯৫% এরও বেশি।
প্রতিরোধের উপায়
1. অপরিষ্কার বা গরম জলে স্নান না করা।
2. নদী-পুকুরে নামলে অবশ্যই নাকে ক্লিপ ব্যবহার করা।
3. নাক পরিষ্কারের সময় শুধুমাত্র ফুটানো ও ঠান্ডা করা জল ব্যবহার করা।
4. বাড়ির জলের ট্যাংক নিয়মিত পরিষ্কার করা।
5. অসুস্থতার প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া।
চিকিৎসা
এই রোগের জন্য নির্দিষ্ট ওষুধ নেই। তবে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ও কিছু পরীক্ষামূলক ওষুধ ব্যবহার করে চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে বাঁচার সম্ভাবনা কিছুটা বাড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকা-ই একমাত্র উপায়। সময়মতো সাবধানতা নিলে মস্তিষ্ক খেকো অ্যামিবার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
No comments:
Post a Comment