ভারতে হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দূষণ, আবহাওয়ার পরিবর্তন, অ্যালার্জি, ধুলাবালি ও ধোঁয়ার কারণে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এই সমস্যায় ভুগছেন। শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি একবার শুরু হলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে যায়। যদিও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া সবচেয়ে জরুরি, তবুও ঘরে বসে কিছু সাধারণ টোটকা মানলে অনেকটা উপশম পাওয়া সম্ভব।
হাঁপানির রোগীরা প্রায়ই লক্ষ্য করেন যে ঠান্ডা বা ধুলাবালিতে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। তাই দৈনন্দিন জীবনে সহজ কিছু উপায় মেনে চললে শ্বাস নেওয়া সহজ হয় এবং রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
প্রথমেই বলা দরকার, হাঁপানির রোগীদের খাওয়া-দাওয়ার প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি। যেসব খাবার শ্বাসনালীতে প্রদাহ বাড়ায় সেগুলি এড়িয়ে চলা উচিত। ভাজা-পোড়া, অতিরিক্ত ঝাল বা প্রসেসড খাবার হাঁপানিকে বাড়িয়ে দিতে পারে। অন্যদিকে, শাকসবজি, ফলমূল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শ্বাসকষ্ট কমাতে সহায়তা করে।
শ্বাসকষ্টের সময় শরীর দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই রোগীকে হালকা ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো দরকার। আদা, হলুদ ও তুলসী পাতার মতো প্রাকৃতিক উপাদান শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং ফুসফুসকে শক্তিশালী করে তোলে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, হাঁপানি রোগীরা এগুলি নিয়মিত খেলে শ্বাস নেওয়া সহজ হয়।
শুধু খাবার নয়, জীবনযাত্রাতেও কিছু পরিবর্তন দরকার। যারা হাঁপানিতে ভোগেন তাদের ধুলাবালি, ধোঁয়া এবং অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদান থেকে দূরে থাকা উচিত। অনেক সময় বাড়ির ভেতরের ধুলো কিংবা বিছানার চাদরে জমে থাকা ধুলাও শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দেয়। তাই পরিবেশকে পরিষ্কার রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে শ্বাসকষ্টের রোগীরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ঘরোয়া টোটকা মেনে চলেছেন। তুলসী পাতা চিবানো, আদার টুকরো খাওয়া, কিংবা হলুদ দুধ পান করা—এগুলি আজও গ্রামীণ ও শহুরে মানুষের কাছে জনপ্রিয়। যদিও এগুলি সম্পূর্ণ চিকিৎসার বিকল্প নয়, তবে উপশম দিতে পারে।
হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হলেও সঠিক যত্ন নিলে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। ঘরোয়া উপায়গুলির সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ মিলিয়ে চলাই হতে পারে সবচেয়ে কার্যকর সমাধান।
No comments:
Post a Comment