প্রাচীনকাল থেকেই মৌরি (Fennel Seeds) ভারতীয় রান্নাঘরের পরিচিত একটি মশলা। শুধু খাবারের স্বাদ বাড়াতেই নয়, আয়ুর্বেদ, ইউনানি এবং লোকজ চিকিৎসায় মৌরি দীর্ঘদিন ধরে হজমশক্তি বৃদ্ধি, শরীর পরিষ্কার রাখা এবং নানা রোগ থেকে মুক্তির জন্য ব্যবহার হয়ে আসছে।
হজমের সমস্যায় কার্যকর
বিশেষজ্ঞদের মতে, মৌরিতে রয়েছে ভোলাটাইল অয়েল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার যা হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। যাদের গ্যাস, অম্বল বা পেট ফাঁপার সমস্যা আছে, তাদের জন্য মৌরি এক প্রাকৃতিক ওষুধের মতো কাজ করে। নিয়মিত মৌরি খেলে বা ভিজিয়ে রাখা মৌরির নির্যাস খেলে খাবার দ্রুত হজম হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেকটাই কমে যায়।
গ্যাস ও পেট ফাঁপা থেকে মুক্তি
অনেক সময় অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বা অতিরিক্ত মশলাদার খাবার খাওয়ার কারণে পেট ফেঁপে যায়। মৌরি খেলে অন্ত্রে জমে থাকা অতিরিক্ত গ্যাস বের হয়ে যায় এবং পেট হালকা লাগে। তাই ভারী খাবারের পরও মৌরি খাওয়ার প্রচলন বহু পুরনো।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
মৌরি শুধু হজমের সমস্যার সমাধানেই নয়, শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মৌরির নির্যাস শরীরে ক্যালোরি বার্ন করার ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে নিয়মিত সেবনে ওজন কমানোর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হতে পারে। তাই যাঁরা ডায়েট ও ব্যায়ামের সঙ্গে প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তাদের জন্য মৌরি বেশ কার্যকর হতে পারে।
শরীর পরিষ্কার রাখে
মৌরি একটি প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ার হিসেবে কাজ করে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে জমে থাকা ক্ষতিকর উপাদান বের করে দেয়, লিভার ও কিডনির কাজকে সহজ করে। নিয়মিত মৌরি খেলে শরীর ভেতর থেকে সুস্থ থাকে এবং ত্বকের জেল্লাও বাড়ে।
কীভাবে খাবেন মৌরি?
এক চামচ মৌরি রাতে এক গ্লাস জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই নির্যাস পান করতে পারেন।
চাইলে হালকা গরম করেও খাওয়া যায়।
ভারী খাবারের পর সরাসরি অল্প পরিমাণ মৌরি চিবিয়েও খাওয়া যায়।
তবে যাঁরা ডায়াবেটিস বা হরমোনজনিত সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের নিয়মিত মৌরি খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কারণ, যেকোনও ভেষজ উপাদান যেমন উপকারী, তেমনই অতিরিক্ত সেবনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে।
No comments:
Post a Comment