প্রাচীনকাল থেকেই রান্নাঘরকে বাড়ির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হিসেবে ধরা হয়। কারণ এখানে পরিবারের খাবার প্রস্তুত হয়, আর খাবারের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে সবার সুস্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধি। বাস্তু শাস্ত্র অনুযায়ী রান্নাঘরের সঠিক দিক ও কিছু বিশেষ নিয়ম মেনে চললে ঘরে শান্তি, স্বাস্থ্যের উন্নতি এবং অর্থ-সম্পদের প্রবাহ বাড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রান্নাঘরের আদর্শ দিক হলো দক্ষিণ-পূর্ব। কারণ এই দিককে অগ্নিদেবতার স্থান বলা হয়। যদি বাড়িতে রান্নাঘর দক্ষিণ-পূর্ব দিকে করা সম্ভব না হয়, তবে উত্তর-পশ্চিম দিকও ব্যবহার করা যায়। তবে উত্তর-পূর্ব, দক্ষিণ-পশ্চিম বা মাঝখানে রান্নাঘর তৈরি করলে বাস্তু দোষের সম্ভাবনা থাকে।
রান্নার চুলা বা গ্যাসের অবস্থানও বাস্তুতে বিশেষ গুরুত্ব পায়। চুলা সবসময় দক্ষিণ-পূর্ব কোণে রাখা ভালো এবং রান্নার সময় মুখ ideally পূর্ব দিকে থাকা উচিত। এতে ইতিবাচক শক্তি বজায় থাকে এবং পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মানসিক শান্তি আসে। চুলা কখনোই জলের উৎস যেমন সিঙ্ক বা জলের কলের পাশে রাখা উচিত নয়, কারণ অগ্নি ও জল একসঙ্গে থাকলে বাস্তু দোষ সৃষ্টি হয়।
বাস্তু শাস্ত্রে বলা হয়, রান্নাঘর সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা দরকার। রান্নার পর চুলা মুছে রাখা, বাসনপত্র গোছানো এবং মেঝে পরিষ্কার রাখা সমৃদ্ধির লক্ষণ। রান্নাঘরে অন্ধকার বা অগোছালো পরিবেশ অর্থ প্রবাহে বাধা দেয় বলে মনে করা হয়। তাই রান্নাঘরে পর্যাপ্ত আলো ও বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকা জরুরি।
টাকা-পয়সা বাড়াতে রান্নাঘরে কিছু প্রতীকী নিয়ম মানা হয়। যেমন চাল, ডাল, গম ও লবণের ডিব্বা সবসময় পরিপূর্ণ রাখা সমৃদ্ধির প্রতীক। ফ্রিজ বা আলমারি ফাঁকা না রেখে অল্প হলেও কিছু খাবার বা জিনিস রাখা শুভ মনে করা হয়। তাছাড়া রান্নাঘরে ভাঙা বাসন বা নষ্ট জিনিস না রাখাই ভালো, এগুলো অশুভ শক্তি আকর্ষণ করে বলে বিশ্বাস করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, রান্নাঘরের রঙও গুরুত্বপূর্ণ। হালকা হলুদ, কমলা বা সবুজ রঙ ইতিবাচক শক্তি বাড়ায়। কালো বা ধূসর রঙ রান্নাঘরে এড়ানো উচিত।
সবশেষে বলা যায়, রান্নাঘরে বাস্তু মেনে চললে শুধু খাবারের স্বাদই বাড়ে না, পরিবারের সুস্বাস্থ্য, শান্তি ও সমৃদ্ধিও বৃদ্ধি পায়। তাই বাড়ির রান্নাঘরকে শুভ শক্তির কেন্দ্রবিন্দু করতে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
No comments:
Post a Comment