উত্তর প্রদেশের কৌশাম্বি জেলা থেকে একটি বড় খবর বেরিয়ে এসেছে, যা প্রশাসনের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। এখানে, সাতজন পাকিস্তানি এবং দুইজন বাংলাদেশি নাগরিক স্থানীয় গ্রামপ্রধানের সহায়তায় জাল নথি তৈরি করে নিজেদের ভারতীয় নাগরিক প্রমাণ করেছেন। ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও এই বিদেশী নাগরিকরা জাল আবাসিক শংসাপত্র, আধার কার্ড, রেশন কার্ড এবং ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা নিচ্ছিলেন। এর পাশাপাশি, তারা জমি এবং বাড়িও কিনেছেন।
এই পুরো বিষয়টির মূলে পৌঁছাতে গিয়ে দেখা গেছে যে কৌশাম্বী জেলার বিভিন্ন গ্রামে বহু বিদেশী নাগরিক বছরের পর বছর ধরে বসবাস করছেন। প্রথমত, কারারি থানা এলাকার চক হিঙ্গুই গ্রামের ৫৫ বছর বয়সী সায়রা বেগমের ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে, যিনি পাকিস্তানের নাগরিক। ১৯৮৭ সালে ভারতে আসার পর, তিনি স্থানীয় কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে জাল নথি তৈরি করেন এবং তার পরিবারের সাথে এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তার আট সন্তানও ভারতে থাকেন।
এছাড়া, কারারি নগর পঞ্চায়েত এলাকার চমনগঞ্জ গ্রামে বসবাসকারী সৈয়দ আমরীন আব্বাস এবং সৈয়দ আমির হুসেন নকভিও পাকিস্তান থেকে এসেছেন। তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু তারা গ্রাম প্রধানের সহায়তায় জাল নথি তৈরি করে সরকারি সুযোগ-সুবিধাও পেয়েছেন। প্রায় ৪৪ বছর ধরে ভারতে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিক শামীম আরাও জাল নথির সাহায্যে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক ঘোষণা করেছেন এবং সম্পত্তি কিনেছেন।
একইভাবে, জাফরপুর মহাওয়ান গ্রামের জিয়াউদ্দিন এবং গধাইপার মহল্লার সিদরা নিসারও জাল কাগজপত্রের সাহায্যে এখানে বসবাস করছেন। সাহার সিম্মি নামে এক পাকিস্তানি নাগরিকও ভিসা পেয়ে গ্রামপ্রধানের সাথে যোগসাজশে ভোটার আইডি এবং অন্যান্য নথি তৈরি করেছিলেন। এই বিষয়টি প্রশাসনের কপালে উদ্বেগের রেখা তৈরি করেছে।
কর্মকর্তারা অনেক বিদেশী নাগরিকের রেশন কার্ড বাতিল করেছেন এবং তাদের ভোটার আইডি বাতিল করার নির্দেশও দিয়েছেন। তবে, গ্রামপ্রধান, সচিব, হিসাবরক্ষক এবং অনেক তহসিল কর্মকর্তাও এই পুরো খেলায় জড়িত বলে জানা গেছে, যাদের যোগসাজশ ছাড়া এত বিপুল সংখ্যক জাল নথি তৈরি করা সম্ভব ছিল না। জেলার প্রধান কর্মকর্তা মধুসূদন হুলগি এখনও এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেননি, তবে তদন্ত শেষ হওয়ার পরে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এখন দেখার বিষয় এই বড় কেলেঙ্কারির বিষয়ে প্রশাসন কী পদক্ষেপ নেয় এবং ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ভুল আবার না ঘটে তার জন্য কী ব্যবস্থা তৈরি করা হয়।
No comments:
Post a Comment