পাকিস্তানে চলমান ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি মানুষের দুর্দশাকে আরও গভীর করে তুলেছে। পাঞ্জাব, খাইবার পাখতুনখোয়া, সিন্ধু এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরসহ একাধিক প্রদেশে অবিরাম বর্ষণে ঘরবাড়ি ভেসে যাচ্ছে, রাস্তা-ঘাট ধ্বংস হচ্ছে, হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ছে। ইতিমধ্যেই লক্ষাধিক মানুষকে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হতে হয়েছে। জলাবদ্ধতা থেকে রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও দিন দিন বাড়ছে।
এমন কঠিন সময়েই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফের এক মন্তব্য দেশজুড়ে বিতর্কের ঝড় তুলেছে। পাকিস্তানের একটি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি বলেন, বন্যার জলকে "ঈশ্বরের করুণা" হিসেবে দেখা উচিত এবং জনগণের উচিত সেটিকে বালতি ও টবে ভরে ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করা। তাঁর এই মন্তব্য শুধু সাধারণ মানুষের ক্ষোভই বাড়ায়নি, সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
সমালোচকদের দাবি, যখন দেশ জুড়ে হাজার হাজার মানুষ ঘরছাড়া, খাদ্য ও পানীয়র সংকটে ভুগছে, তখন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য আসলে সরকারের ব্যর্থতাকেই স্পষ্ট করে দেয়। রাজনৈতিক মহলও এ নিয়ে সরব হয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন— যেখানে কার্যকর ত্রাণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন ছিল, সেখানে শাসকদলের মন্ত্রীরা কেবল বক্তব্যবাজিতেই ব্যস্ত।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রায় প্রতিবছরই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ডেকে আনে। বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে বন্যার প্রকোপ ক্রমশ ভয়াবহ হয়ে উঠছে। কিন্তু সঠিক পরিকাঠামো ও দুর্যোগ মোকাবিলার পরিকল্পনার অভাবে সাধারণ মানুষকে বিপদের মুখে পড়তে হচ্ছে।
এই প্রেক্ষাপটে খাজা আসিফের "বন্যার জল সংরক্ষণ" মন্তব্য নিঃসন্দেহে কটাক্ষ ও বিতর্কের কেন্দ্রে এসে দাঁড়িয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লেও পাকিস্তানের সরকারি মহল এখন পর্যন্ত এ নিয়ে স্পষ্ট কোনো অবস্থান নেয়নি।
.jpg)
No comments:
Post a Comment