চার্লি কার্ককে ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’ দিচ্ছেন ট্রাম্প! কী এই পুরস্কার, কেন দেওয়া হয়—জেনে নিন বিস্তারিত

 মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রক্ষণশীল কর্মী চার্লি কার্ককে 'প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল ফর ফ্রিডম' দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। কয়েক ঘন্টা আগে চার্লি কার্ককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। ট্রাম্প কার্ককে একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, তিনি আমেরিকার জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। ট্রাম্প বলেছেন- চার্লি কার্ক স্বাধীনতার একজন রক্ষক ছিলেন। তার হত্যা আমেরিকাকে ভয় ও শোকে ভরিয়ে দিয়েছে। তার কণ্ঠস্বর এখনও মানুষের হৃদয়ে জীবিত থাকবে।

আমেরিকান সমাজে অসাধারণ অবদান রাখা ব্যক্তিদের সম্মান জানানোর জন্য প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। এই সম্মান কেবল আমেরিকান নাগরিকদেরই নয়, বিশ্ব শান্তি এবং মানবতার সেবায় অবদান রাখা বিদেশী নাগরিকদেরও দেওয়া হয়। চার্লি কার্কের অকাল মৃত্যুর পর এই সম্মানে ভূষিত হওয়া এই সম্মানের গুরুত্ব এবং ব্যাপক প্রসারকে প্রকাশ করে।

এই সম্মান কী?

প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম হল আমেরিকার সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার। জাতীয় নিরাপত্তা, বিশ্ব শান্তি, সংস্কৃতি বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি বা বেসরকারি প্রচেষ্টায় অসাধারণ অবদান রাখার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট এটি প্রদান করেন।

এটি কখন শুরু হয়?

এই পুরস্কার ১৯৬৩ সালে রাষ্ট্রপতি জন এফ. কেনেডি দ্বারা শুরু হয়েছিল। এর আগে ১৯৪৫ সালে রাষ্ট্রপতি হ্যারি এস. ট্রুম্যান স্বাধীনতা পদক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যা পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি স্বাধীনতা পদক হিসাবে পরিচিত হয়।

এই সম্মান কাদের দেওয়া হয়?
এই সম্মান আমেরিকান নাগরিক, বিদেশী নাগরিক এবং কখনও কখনও সামরিক কর্মীদেরও দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি নিজের উদ্যোগে অথবা সুপারিশের ভিত্তিতে এটি প্রদান করতে পারেন।

কেন এটি দেওয়া হয়?

এই সম্মান তাদের দেওয়া হয় যারা:

জাতির নিরাপত্তা বা জাতীয় স্বার্থে অসাধারণ অবদান রেখেছেন।

বিশ্ব শান্তির জন্য উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা করেছেন।

সাংস্কৃতিক, সামাজিক, অথবা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি বা বেসরকারি প্রচেষ্টায় অবদান রেখেছেন।

এখন পর্যন্ত কতজন ব্যক্তি এটি পেয়েছেন?

২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, প্রায় ৬৭২ জন ব্যক্তি এই সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। গড়ে, প্রতি বছর এটি ১০ জনেরও কম ব্যক্তিকে দেওয়া হয়।

কারা কারা এটি পেয়েছেন?

এখন পর্যন্ত এই সম্মানে ভূষিত কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের মধ্যে রয়েছেন:

মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র - নাগরিক অধিকারের জন্য লড়াই করা নেতা।

রোজা পার্কস - নাগরিক অধিকার কর্মী।

মাদার তেরেসা - মানবতার সেবায় নিবেদিতপ্রাণ।

স্টিভ জবস - অ্যাপলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবক।

বব ডিলান - বিখ্যাত গায়ক এবং গীতিকার।

অ্যাঞ্জেলা মার্কেল - জার্মানির প্রাক্তন চ্যান্সেলর।

জেন স্টেইন - আমেরিকান সাংবাদিক এবং লেখক।

কোন বিদেশী কি এটি পেয়েছেন?

হ্যাঁ, এই সম্মাননা কিছু বিদেশী নাগরিককেও দেওয়া হয়েছে, যেমন:

অ্যাঞ্জেলা মার্কেল - জার্মানির প্রাক্তন চ্যান্সেলর।

মাদার তেরেসা - ভারতীয় নাগরিক, যিনি বিশ্বজুড়ে মানবতার সেবা করেছেন।

ভ্লাদিমির পুতিন - রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি, যাকে কয়েক বছর আগে সম্মানিত করা হয়েছিল।

চার্লি কার্কের প্রতি সম্মান: একটি বিশেষ ঘটনা

রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে তিনি চার্লি কার্ককে মরণোত্তর প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম প্রদান করবেন। টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ-এর প্রতিষ্ঠাতা চার্লি কার্ককে ২০২৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর উটাহ ভ্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানের সময় গুলি করে হত্যা করা হয়। তার অকাল মৃত্যু আমেরিকান রাজনীতিতে শোকের ছায়া ফেলে।

রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প তাকে "সত্য ও স্বাধীনতার শহীদ" বলে অভিহিত করে এই পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে রক্ষণশীল ধারণা প্রচারে কার্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।