'পিওকে নিজেই ভারতে আসবে--', মরক্কোর মাটি থেকে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা রাজনাথ সিংয়ের - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Monday, September 22, 2025

'পিওকে নিজেই ভারতে আসবে--', মরক্কোর মাটি থেকে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা রাজনাথ সিংয়ের


ওয়ার্ড ডেস্ক, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫: ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং দুই দিনের মরক্কো সফরে রয়েছেন। কোনও ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এটি প্রথম মরক্কো সফর। রাজনাথ সিং টাটা অ্যাডভান্সড সিস্টেমসের উৎপাদন ইউনিট উদ্বোধন করতে মরক্কো গিয়েছেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুসারে, এই ইউনিটটি আফ্রিকার প্রথম ভারতীয় প্রতিরক্ষা উৎপাদন কারখানা। তিনি এখানে তাঁর সমকক্ষ আবদেল্লাতিফ লাউদিয়ার সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করবেন। রাজনাথ সিং মরক্কোর রাজধানী রাবাতে ভারতীয় সম্প্রদায়ের লোকজনের উদ্দেশ্যেও ভাষণ দেন।


মরক্কোতে ভারতীয় সম্প্রদায়ের সাথে আলাপচারিতায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, "ভারতের প্রতি আমাদের ভক্তি, স্নেহ এবং ভালোবাসা স্বাভাবিক। আমরা বিশ্বের যেখানেই থাকি না কেন, আমাদের কখনই ভুলে যাওয়া উচিৎ নয় যে, আমরা ভারতীয়। ভারতীয় হিসেবে আমাদের দায়িত্ব অন্যদের থেকে আলাদা। আমরা যদি মরক্কোতে জীবিকা নির্বাহ করি এবং আমাদের পরিবারের যত্ন নিই, তাহলে মরক্কোর সাথে কোনও বিশ্বাসঘাতকতা হওয়া উচিৎ নয় - এটাই ভারতের চরিত্র।"


মরক্কোতে ভারতীয় সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, "পিওকে নিজে থেকেই আমাদের হবে। পিওকেতে দাবী উঠতে শুরু করেছে; আপনারা নিশ্চয়ই স্লোগান শুনেছেন। আমি পাঁচ বছর আগে, কাশ্মীর উপত্যকায় একটি অনুষ্ঠানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দিচ্ছিলাম, যখন আমি বলেছিলাম যে, আমাদের পিওকেতে আক্রমণ করে দখল করার দরকার নেই; এটা এমনিতেই আমাদের; পিওকে নিজেই বলবে, 'আমিও ভারত'। সেই দিন আসবে।"


মরক্কোতে ভারতীয় সম্প্রদায়ের সাথে আলাপচারিতায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন - "'জিন মোহি মারা, তিন মোহি মারে'... এবারও একই ঘটনা ঘটেছে। আমরা তাদেরই মেরেছি যারা আমাদের জনগণকে মেরেছে। আমরা কোনও বেসামরিক বা সামরিক স্থাপনায় আক্রমণ করিনি। কেবল ভারতেরই এমন চরিত্র থাকতে পারে। আমরা যদি চাইতাম, আমরা যে কোনও সামরিক বা বেসামরিক স্থাপনায় আক্রমণ করতে পারতাম, কিন্তু আমরা তা করিনি। আমাদের ভারতের এই চরিত্র বজায় রাখা উচিৎ।" রাজনাথ সিং বলেন - "সন্ত্রাসীরা এখানে এসে আমাদের নাগরিকদের তাদের ধর্ম জিজ্ঞাসা করে মেরেছে। আমরা কারও ধর্ম দেখিনি বরং তাদের কর্ম দেখে মেরেছি।"


ভারতীয় সম্প্রদায়ের সাথে কথা বলতে গিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, "দ্বিতীয় অংশ নাকি তৃতীয় অংশ এখনও বিচারাধীন, আমরা বলতে পারছি না। এটা তাদের (পাকিস্তানের) আচরণের ওপর নির্ভর করে। যদি তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে, তাহলে তারা জবাব পাবে। পহেলগামে, আমাদের ২৬ জন ধর্ম জিজ্ঞাসা করে মেরে ফেলা হয়। পরের দিন, ২৩শে এপ্রিল, সিডিএস, তিন বাহিনীর প্রধান এবং প্রতিরক্ষা সচিবের সাথে এক বৈঠকে, আমি প্রথম যে প্রশ্নটি জিজ্ঞাসা করেছিলাম তা হল সরকার যদি কোনও অভিযান শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় তবে তারা কি প্রস্তুত? আপনারা জেনে খুশি হবেন যে, এক সেকেন্ডও বিলম্ব না করে তারা উত্তর দিয়েছিলেন যে তারা সম্পূর্ণ প্রস্তুত। তারপর আমরা প্রধানমন্ত্রী মোদীর সাথে যোগাযোগ করি, যিনি আমাদের এগিয়ে যেতে বলেন এবং সম্পূর্ণ ছাড় দেন।"


রাজনাথ সিং বলেন, "তারপর কী হয়েছিল তা আপনারা দেখেছেন। সীমান্তে নয়, আমরা তাদের ভূখণ্ডের ১০০ কিলোমিটার ভেতরে সন্ত্রাসীদের আস্তানা ধ্বংস করেছি। জৈশ-ই-মোহাম্মদের একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী বলছিল যে, ভারত মাসুদ আজহারের পরিবারকে ধ্বংস করেছে। পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করেছিল এবং আমরা তাতে রাজি হয়েছিলাম। আমরা সুসম্পর্ক চাই কারণ অটল বিহারী বাজপেয়ী আগে বলতেন যে, বন্ধু বদলানো যেতে পারে, কিন্তু প্রতিবেশী নয়। আমরা তাদের সঠিক পথে আনার চেষ্টা করছি। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন যে এটি কেবল একটি বিরতি। অপারেশন সিঁদুর মাত্র থেমে আছে। এটি আবার শুরু করা যেতে পারে।"



রাজনাথ সিং বলেন, "আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে ভারতের ক্রমবর্ধমান মর্যাদা আপনারা অনুভব করতে পারছেন জেনে আমি খুশি। আগে, যখন ভারত কোনও আন্তর্জাতিক মঞ্চে কথা বলত, তখন তা ততটা গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হত না যতটা গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিৎ ছিল। আজ, যখন ভারত কোনও আন্তর্জাতিক মঞ্চে কথা বলে, তখন পুরো বিশ্ব মনোযোগ দেয় এবং তা শোনে। আগে এমনটা ছিল না। সমস্ত ভূ-রাজনৈতিক এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, ভারত দ্রুত বর্ধনশীল প্রধান অর্থনীতিগুলির মধ্যে একটি।"


রাজনাথ সিং বলেন- "আমরা নারী শক্তি বন্দন আইন শুরু করেছি। আপনি যদি মরক্কো থেকে ভারতে ফিরে এসে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান, তাহলে লোকসভা, রাজ্যসভা এবং বিধানসভায় ৩৩‌ শতাংশ সংরক্ষণ পাবেন। সংসদে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ভারত স্টার্টআপ এবং উদ্ভাবনের একটি বিশ্বব্যাপী কেন্দ্র হয়ে উঠছে। ২০১৪ সালে ভারতে ৫০০টি স্টার্টআপ ছিল এবং এখন তা ১.৬০ লক্ষে উন্নীত হয়েছে। ২০১৪ সালে ভারতে ইউনিকর্নের সংখ্যা ১৮টি ছিল, যা আজ ১১৮টিতে দাঁড়িয়েছে।"

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad