ডাক্তার বলেছিলেন অপারেশন করতে পারবে না’, অবশেষে সব সত্যি সামনে আনলেন সন্তানহারা সোহিনী - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Friday, September 5, 2025

ডাক্তার বলেছিলেন অপারেশন করতে পারবে না’, অবশেষে সব সত্যি সামনে আনলেন সন্তানহারা সোহিনী



প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ৫ সেপ্টেম্বর : কিছুদিন আগে পুত্র সন্তানকে হারিয়েছে ন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার সোহিনী গঙ্গোপাধ্যায়। তাদের পরিবারের তরফ থেকে অভিযোগ আনা হয়েছিল এক চিকিৎসকের গাফিলতির জন্যই তাদের সন্তানের মৃত্যু হয়েছে।



পরবর্তীকালে ওই ডাক্তার মুখ খুলে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার চেষ্টা করে। আর তারপর থেকেই শুরু হয় কাটাছেঁড়া। তবে সোহিনী সকলের কাছে সময় চেয়ে নিয়েছিলেন এবং তিনি জানিয়েছিলেন প্রমাণ সহ সবটা সামনে আনবেন।


এবার প্রমাণ সহ ২ রা সেপ্টেম্বর একটি ভিডিও করে সব সামনে আনলেন তিনি। স্বামীকে পাশে নিয়েই সবটা মুখ খুলে বললেন। তবে সন্তান হারিয়ে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই বিধ্বস্ত অবস্থায় রয়েছেন। তবুও সমাজ মাধ্যমে তাদের দিকে একাধিক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। দুর্ঘটনার আগের দিন থেকে ঠিক কী তা পুরোটাই তুলে ধরেন তিনি।


সোহিনী জানান, ২২ তারিখ ভোর রাতে হঠাৎ করেই সন্তানের নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায়। ৮টা নাগাদ ডাক্তারের কাছে যেতেই তিনি অক্সিজেন নিতে বলেন। ডাক্তার জানান সোহিনীর হাই প্রেসার। কিন্তু ৮ মাসে একদিনও সোহিনীকে প্রেসারের ওষুধ খেতে হয়নি। নরমাল ছিল প্রেসার।



সোহিনীর স্বামীর দেখানো প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী, প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত একদম নরমাল প্রেসার ছিল সোহিনীর। এদিন ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তার জানান, কটি ইউএসজি করিয়ে কল্যাণীর একটি নার্সিংহোমে সোহিনীকে নিয়ে আসতে। এদিকে তিনি চাকদা মেডিকেল কলেজে ক্লাস করাতে চলে যান।



সোহিনীকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তখন বলা হয় তার শিশু সুস্থ আছে। তবে যেহেতু সোহিনীরা তাঁদের ডাক্তার অর্থাৎ এস এন রায়ের এর কাছেই অপারেশন করাতে চাইছিলেন তাই তাঁরা ইউএসজি করাতে যান একটি ডায়গনোস্টিক সেন্টারে। ওখানেও দেখা যায় যে শিশুটি নড়াচড়া করছে। তবে দেখা যায় শিশুর গলায় কর্ড জড়িয়ে গিয়েছে। এটা শোনার পরেই আবার ডাক্তারের কাছে যান তারা।


পরীক্ষা করে ডাক্তার জানান, বাচ্চা যেহেতু প্রিম্যাচিউর তাই একদিন অবজারভেশনে রেখে তারপর অপারেশন করা হবে। ততক্ষণ বাচ্চার নড়াচড়া লক্ষ্য করতে বলা হয়। কিন্তু ভর্তি হওয়ার পর থেকে কোনওরকম মনিটারিং করা হয় না সোহিনীকে। এদিকে বেলা ১২টার পর থেকে আর বাচ্চার নাড়াচাড়া বুঝতে পারে না সোহিনী।



ডাক্তারকে ফোন করলে উনি বেলা ২ টোর সময় আসেন। পরীক্ষা করে বলেন, “শিশু নড়াচড়া করছে না।” তিনি জানান, “সকাল থেকেই শিশু নড়াচড়া করছিল না”।



সোহিনীর স্বামী অনির্বাণ বলেন, ডাক্তার সকালে বলেছিলেন শিশুটি বেঁচে আছে, আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষাতেও তাই দেখানো হয়েছিল। এরপর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অন্য একটি ডায়গনোস্টিক সেন্টারে আবার আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে নিয়ে যাওয়া হয় সোহিনীকে। আল্ট্রাসনোগ্রাফি করতে গিয়েই আমরা জানতে পারি শিশুটি আর নেই।


এরপর ডাক্তারকে ফোন করলে উনি বলেন নার্সিংহোমে ভর্তি করে দিতে। ডাক্তারের কাঁচড়াপাড়ার বাড়িতে গেলে উনি নরমাল ডেলিভারির জন্য ওষুধ দিয়ে দেন। ওই অবস্থায় সোহিনীকে আবার নিয়ে যাওয়া হয় ডাক্তারের পলিক্লিনিকে।


এরপর সোহিনীকে আবার নার্সিংহোমে পাঠিয়ে দেন ওই ডাক্তার। তিনি নার্সিংহোমে এলে সোহিনীর বাড়ির লোক খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন করেন ডাক্তারকে। সবাই মিলে ডাক্তারকে ধরলে তিনি বলেন, তিনি সুগারের রুগী, হাত-পা কাঁপছে ইনসুলিন নিতে হবে। এদিকে সোহিনীর প্রচন্ড ব্যথা শুরু হয়ে যায়। কিন্তু ডাক্তার অপারেশন করতে চান না। অবশেষে অনির্বাণ লিখিত দিলে তবে অপারেশন করানো হয়। অনির্বাণের দাবি অনুযায়ী, অপারেশনের পর তিনি সন্তানকে দেখে বুঝেছিলেন যে প্রিইম্যাচিউর বেবি ছিল না। অনায়াসে আগেই অপারেশন করে দেওয়া যেত।


শুধু তাই নয়, ডাক্তারের নির্দেশ মতো সঙ্গে সঙ্গে সোহিনীকে নিয়ে যাওয়া হয় অন্য হাসপাতালে, যেখানে সবরকম ব্যবস্থা ছিল। অবশেষে দুদিন পর সুস্থ হয় সোহিনী।


ডাক্তার ভিডিওতে বয়স জনিত সমস্যার কথা জানিয়েছেন। সোহিনীর বয়স মাত্র ৩১ তাই বয়স জনিত সমস্যা হওয়ার কোনও কথা নয়।


সোহিনীর স্বামী অনির্বাণ বলে, সমস্যা হলে তিনি আগেই বলতেন, কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ মতোই সবকিছু আমরা।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad