দক্ষিণ ২৪ পরগনা: মায়ের আগমণে আর কয়েকটা দিন বাকি। নদীর ধারে ফোটা কাশফুল জানান দিচ্ছে মা আসছেন। এই সময় প্রতিমা গড়তে ব্যস্ত শিল্পীরা। এরই মাঝে সৃজনশীলতার অনন্য নিদর্শন দেখা গেল সোনারপুরের মিশনপল্লীর বাসিন্দা জয়মাল্য মণ্ডলের হাতে। এ বছর তিনি তৈরি করেছেন এক অভিনব দুর্গা প্রতিমা, যা পুরোপুরি বানানো হয়েছে বেলপাতা দিয়ে। প্রায় সাড়ে পাঁচশো বেলপাতা ব্যবহার করে গড়ে উঠেছে এই অনন্য প্রতিমা, যা ইতিমধ্যেই এলাকায় সাড়া ফেলে দিয়েছে। সেই সঙ্গেই উঠেছে প্রশংসার ঝড়।
সোনারপুর কলেজের ইতিহাস অনার্সের ছাত্র জয়মাল্য। ছোটবেলা থেকেই তিনি শিল্পপ্রেমী। কোনও প্রথাগত প্রশিক্ষণ না নিয়েও নিজের কল্পনাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্রতিবারই নতুনভাবে তৈরি করেন দুর্গা প্রতিমা। এর আগে দেশলাই কাঠি, তেজপাতা, এমনকি মাটি দিয়েও প্রতিমা বানিয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। এবার বেলপাতা দিয়ে তৈরি প্রতিমা তাঁর নতুন সংযোজন। পাতাগুলি যাতে শুকিয়ে না যায়, তাই বিশেষভাবে রং করে সেগুলো সংরক্ষণ করা হয়েছে। শুধু প্রতিমাই নয়, ছোটবেলা থেকেই জয়মাল্যের কল্পনার জগতে তৈরি হয়েছে নানা শিল্পকর্ম। কখনও এটিএম মেশিন, কখনও ট্রেন, আবার কখনও তাজমহল; সবই বানিয়েছেন নিজের হাতে।
জয়মাল্যর প্রতিভাকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস। তাঁর তৈরি প্রতিমা স্থান পেয়েছে বাড়ির ঠাকুরের আসনের কাছেই। পুজোর সময় সমস্ত নিয়ম মেনেই সেখানে দেবীর আরাধনা হয়। পরিবারের সদস্যরা জয়মাল্যের এই অনন্য প্রতিভায় ভীষণ খুশি ও গর্বিত। তাঁদের আশা, সামনে আরও বড় মঞ্চে পৌঁছাবে এই প্রতিভা। জয়মাল্যের এই উদ্যোগ প্রমাণ করে, দুর্গা পুজো শুধু ভক্তির উৎসব নয়, শিল্প ও কল্পনার এক বিস্ময়কর মেলবন্ধনও। এবারের পুজোয় তাই বেলপাতার দুর্গাই হয়ে উঠেছে সোনারপুরের অন্যতম আকর্ষণ।
জয়মাল্য জানান, পাড়ার এক কাকু বেলপাতা দিয়ে যায়, তা দিয়েই দুর্গা প্রতিমা গড়েছেন। তাঁর কথায়, 'মা বুদ্ধি দিয়েছিল বেল পাতার ঠাকুরকে কালো হওয়া থেকে বাঁচাতে সবুজ রং করতে।' তিনি জানান, পঞ্চমীতে তার তৈরি এই দুর্গা মূর্তি মণ্ডপে যাবে এবং পুজো শেষে আবার তাঁর বাড়িতে এটি নিয়ে আসা হবে।
No comments:
Post a Comment