৩৩৩ বছরের প্রাচীন দুর্গা পুজো; ভিন্ন মেজাজে ধরা দিলেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার, শারদোৎসবে কী প্রার্থনা তৃণমূল সাংসদের? - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Sunday, September 28, 2025

৩৩৩ বছরের প্রাচীন দুর্গা পুজো; ভিন্ন মেজাজে ধরা দিলেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার, শারদোৎসবে কী প্রার্থনা তৃণমূল সাংসদের?


উত্তর ২৪ পরগনা, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫: রাজ্য তথা দেশের রাজনীতিতে অতি পরিচিত মুখ তিনি। চার চার বারের তৃণমূলের সাংসদও বটে। সম্প্রতি দলের পক্ষ থেকে লোকসভার চিফ হুইপ করা হয়েছে তাঁকে। নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন কার কথা বলা হচ্ছে! হ্যাঁ, বলা হচ্ছে কাকলি ঘোষ দস্তিদারের কথা। বাংলার বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংসদে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ জানাতে তৃণমূলের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে দেখেছেন বহু মানুষ। কিন্তু দুর্গা পুজোর কয়টা দিন ডাকসাইটে তৃণমূলের এই সাংসদ থাকেন একেবারে ভিন্ন মেজাজে।


৩৩৩ বছরের প্রাচীন পারিবারিক দুর্গা পুজোর নিয়ম রীতি থেকে অতিথিদের আপ্যায়নে ব্যাস্ত থাকেন বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। মধ্যমগ্রামের দিগবেড়িয়ায় সাংসদের বাড়িতে দুর্গা পুজো হচ্ছে গত ৪২ বছর ধরে। পঞ্চমীর দিনেই নিজের ফেসবুক পেজ থেকেই বারাসতের সাংসদ শারদ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সকলকে। এর পাশাপাশি নিজের উষ্মাও প্রকাশ করেছেন।


ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, 'অসুর নিধনকারী মা আমার আরাধ্যা দেবী আমার সাথে। যারা আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে তাঁদের ধ্বংস করে দেবেন। আমি জ্ঞানত কোনও অন্যায় করিনি। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার সাথে যতদিন আছেন, আমাকে কেউ হারাতে পারবে না।' যদিও এই উষ্মা নিজের দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে, নাকি অন্য কেউ টার্গেট, তা খোলসা করেননি বারাসতের সাংসদ।


তবে কাকলি বলেন, 'এটা দশভূজা দেবীর কাছে প্রার্থনা।দলের বিরুদ্ধে কিছু বলার আমার ঔদ্ধত্য নেই। যে দলটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাতে করে মহীরুহ করেছেন, সেই দলের বিরুদ্ধে আমার বলার কিছু নেই। দলের পতাকা নিয়েই মরব।'


ঘোষ দস্তিদার বাড়ির পারিবারিক পুজোর গল্পকথাও আছে। স্বাধীনতার আগে তখনও বিভক্ত হয়নি বাংলা। বরিশালেই ছিল ঘোষ দস্তিদার পরিবারের বাড়ি।

কথিত আছে,স্বপ্নে দেবী দুর্গা তাঁদের বাড়িতে এসে খেতে চেয়েছিলেন পরিবারের অন্যতম সদস্য কালীপ্রসন্ন ঘোষ দস্তিদারের কাছে। স্বপ্নেই কী খেতে দেবেন বলেও জিজ্ঞেস করেছিলেন মা কে। মায়ের আদেশ ছিল, ঘরের এক কোণে রাখা দুধ এবং চাল দিয়ে পরমান্ন করে খেতে দেওয়ার। কালিপ্রসন্ন পরমান্ন রান্না করে মাকে খেতে দিয়েছিলেন। সেই থেকে পুজোয় পরমান্ন রান্না করে মা-কে খেতে দেওয়ার রীতি এখনও চলে আসছে ঘোষ দস্তিদারের বাড়ির পুজোয়। এই পরমান্নকে অবশ্য পরিবারের লোকজন বলেন চরু।


কালিপ্রসন্নর ২৯তম বংশধরেরা এবছর পুজোর আয়োজন করেছেন। নবমীর দিন ধুনুচি নাচ হয় কাকলি ঘোষ দস্তিদারের মধ্যমগ্রামের দিগবেরিয়ার বাড়ির পুজোয়। নবমীর পুজোয় এটাই বৈশিষ্ট্য। ধুনুচি নাচে পরিবারের সকলেরই অংশগ্রহণ থাকেন। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত সবজি বলির প্রথাও রয়েছে।


কাকলি ঘোষ দস্তিদার জনপ্রিয় সাংসদ হওয়ায় সারা বছরে ব্যস্ততা থাকেই। তার ওপর বারাসত সাংগঠনিক জেলায় তিনিই তৃণমূলের সভানেত্রী। ফলে দলের কর্মীদের নিয়ে সাংগঠনিক কাজের গুরুদায়িত্বও সামলাতে হয় তাঁকে। কাকলির স্বামী সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার নিজেও একজন বিশিষ্ট চিকিৎসক, প্রাক্তন মন্ত্রীও। সাংসদের দুই ছেলে বৈদ্যনাথ এবং বিশ্বনাথ দু'জনেই চিকিৎসক এবং বিবাহিত। ফলে সারা বছর তাঁদেরও ব্যস্ততা থাকে। কিন্তু পুজোর কটা দিন সকলেই থাকেন মধ্যমগ্রামের দিগবেরিয়ার বাড়িতে। পুজোর কটা দিন দলের সাধারন কর্মী থেকে নেতা-মন্ত্রীরাও আসেন। তাঁদের সকলের আপ্যায়ন করেন সাংসদ নিজেই।


পুজো প্রসঙ্গে বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, 'আমাদের বাড়িতে উমা রক্তকাঞ্চন বর্ণা। বাড়ির সোনার দুর্গা মূর্তি সারাবছর পূজিতা হন। এই সময় দুই প্রতিমার একইসঙ্গে পুজো হয়। দুর্গা প্রতিমা আসে কুমোরটুলি থেকে। দশমীতে মায়ের বিসর্জনে মনটা খারাপ লাগে।'

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad