রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা দেশের শিল্পপতিদের বিরুদ্ধে কেন ক্ষেপিয়ে দেয় আমাদের ? জানলে চমকে যাবেন - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Monday, September 1, 2025

রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা দেশের শিল্পপতিদের বিরুদ্ধে কেন ক্ষেপিয়ে দেয় আমাদের ? জানলে চমকে যাবেন


ডেস্ক বিশ্লেষণ: রাশিয়ান তেল কেনা নিয়ে এবার জাতি বিদ্বেষী মন্তব্য করলেন ট্রাম্পের বাণিজ্য পরামর্শদাতা পিটার নাভারো। নাভারো বলেন, “ভারত ক্রেমলিনের জন্য লন্ড্রি ছাড়া আর কিছুই নয়…আপনি ভারতীয় জনগণের খরচে ব্রাহ্মণদের মুনাফা অর্জন করতে সাহায্য করেছেন। আমাদের এটি বন্ধ করা দরকার।” কিন্তু কেন হঠাৎ ব্রাহ্মণদের কথা বললেন তিনি, সেই বিষয়ে কিছুই খোলসা করেননি নাভারো। 


নাভারোর মন্তব্য ডিকোড করে অনুমান করলে দাঁড়ায়, দেশের যারা তেল শোধন করে বিক্রি করছেন সেই শিল্পপতিদের কথা বলতে চেয়েছেন তিনি। আমাদের দেশের অনেকেই বলতে পারেন প্রধান মন্ত্রী নিজেদের ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি বা ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিতে ভূ রাজনীতিতে শত্রু বাড়ালেন। স্থিরতা নেই ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি। 


আমাদের দেশের রাজনীতিকরা সাধারণত জনগনকে শিল্পপতিদের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে দেওয়ার চল শুরু হয়েছে ইন্দিরা শাসনকাল থেকে। তখন টাটা ছিল। বর্তমানে আদানি, আম্বানী ইত্যাদি ইত্যাদি কয়েকজন আছেন। যাদের বিরুদ্ধে জনগনকে ক্ষেপিয়ে দেওয়া হয় নানা মন্তব্য করে। তাদের ঋণ মওকুব থেকে নানা বিষয়ে আগুন ঝরা মন্তব্য করেন। কেন করেন তারা? যাদের নামে বলছেন তাদের পণ্য হাতে নিয়ে, কাছে রেখে বা ব্যবহার করে তাদের নামেই বলছেন। এসবের পিছনে আছে অর্থনৈতিক রাজনীতির বিরাট ছক। 


দেশের শিল্পপতিদের শ্রী বৃদ্ধি আটকে দিতে পারলে তাদের পণ্য উৎপাদনের রকমফের হবে না। ওই পণ্য গুলো বিদেশ থেকে আনতে হবে। গল্পটা এখানেই। সেসবের বিস্তারিত লিখলে চাপ আছে। বুঝে নিন। যদিও রাজনৈতিক দলগুলোর অন্ধ অনুগামী পোষ্যরা মানতেই চাইবেন না। 


বর্তমান সময়ের আলোচিত পণ্যের মধ্যে আছে, আমেরিকার অ্যাপল ও বোয়িং। ফ্রান্সের ড্যাসল্ট। সংস্থাগুলো দেশগুলির সরকারি নয়। তবে তারা কাদের কাছে কোন শর্তে পণ্য বিক্রি করবে তা নির্ধারণ করেন দেশগুলো। তেমনি তেল রাশিয়ার সংস্থা গুলোর সাথে ভারতীয় সংস্থা গুলো ব্যবসা করে এবং বিক্রি ব্যবসা করে। এক্ষেত্রে সরকারের নানা অংশগ্রহনে মুনাফা আসে। 


ট্রাম্প চীনের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপালে চীন আমেরিকান বিমান তৈরি সংস্থার বোয়িং বিমান কেনা চুক্তি বাতিল করলে ট্রাম্প প্রশাসন বোয়িং প্রতিষ্ঠানকে বলেন, চীনকে কোনও সরঞ্জাম পাটানো যাবেনা। চীনের কাছে থাকা বোয়িং বিমান রক্ষণাবেক্ষণ করতে বিপদে পড়েছে । তেমনি ট্রাম্প অ্যাপল সংস্থাকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। অ্যাপল কথা শোনেনি। 


এভাবেই আমেরিকা বিশ্বের বহু দেশকে কুক্ষিগত করে রেখেছে। তাদের সাম্রাজ্যবাদের রোলার চালায়। মাথা তুলে দাঁড়াতে দেয় না। উন্নতি নিয়ন্ত্রণ করে। 


আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতারা যেভাবে শিল্পপতি বা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জনগনকে ক্ষেপিয়ে দেয় তা আমেরিকায় হয় না। জাপানে হয় না। ফ্রান্সে হয় না। রাশিয়ায় হয় না। চীনে হয় না। বিশ্লেষণ করলে প্রশ্ন ওঠে স্বদেশী আন্দোলনের দেশ ভারতের রাজনৈতিক দলগুলোর কেন পণ্য উৎপাদনে রাজনৈতিক সহযোগীতা না করে রাজনৈতিক বিরোধীতা করে। জনগনকে ক্ষেপিয়ে দেওয়া হয় শিল্পপতিদের বিরুদ্ধে। 


গরিবদের চিন্তায়? এসি গাড়ি বাড়িতে অভ্যস্ত নেতারা নেতাদের অর্থনৈতিক দৈন্যতা নিয়ে সত্যিই যদি উদ্বিগ্ন হতেন তাহলে শ্রম আইন প্রয়োগ করে শিল্প সংস্থা গুলোকে সহযোগীতা করতে পারে পণ্য উৎপাদনে। সেটা কি বাস্তবে সর্বত্র এদেশে হয় ? সংসদ থেকে মাঠে ঘাটের মঞ্চ কাঁপিয়ে দেশের শিল্পপতিদের বিরুদ্ধে মানুষকে ক্ষেপিয়ে দেন রাজনীতিকরা আমরা বিদেশি মোবাইল কিনে সেগুলো দেখি। ওই ফোনগুলো কিনতে তো বিদেশী সংস্থা ‌ ও দেশকে কর দিতে হয়। তারা বড় লোক হয়। আমরা বেশি দামে কিনি। খরচ তো আমাদের হয়। 


নাভারোর ব্যবহার করা ব্রাক্ষণ আর আমাদের দেশের শিল্পপতি যদি এক হয় তাহলে ট্রাম্প প্রশাসনের সুরেই এতদিন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা কেন আমাদের ক্ষেপিয়ে দিচ্ছিল ? বেশি খুলে বললে চাপ আছে। বুঝে নিন পাঠক সমাজ। ভাবুন, ঠিক বুঝে যাবেন কি বলতে চাইছি আমি। কি বোঝাতে চাইছি আমি। 


কেন বিদেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডাক্তারি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যায় আমাদের দেশের পড়ুয়ারা। দেশের নেতারা তাদের টাকা দিয়ে তো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করে কম খরচে পড়তে দিতে পারত। গরিব, মধ্যবিত্তদের উদ্বিগ্ন হওয়া নেতারা আমাদের পড়ুয়াদের উচ্চ শিক্ষার জন্য লোন দেওয়া ছাড়া কিছু করেছে কি? এটাই ওদের গরীব দরদ। মানব দরদ। 


রাজনৈতিক দলগুলোর ভক্ত পোষ্য অনুগামী হয়ে কি পেয়েছি? কতটা সুস্থ আমরা? আমরা কেমন আছি। নেতারা কেমন আছে? নেতা হয়ে হঠাৎ কেন এত শ্রীবৃদ্ধি? এসবগুলো নিয়ে ভাবতে দোষের কি? আমাদের পণ্য করে নেতাদের আর্থিক বৃদ্ধি তাদের সন্তানদের বৃদ্ধি যতটা হচ্ছে আমাদের ঠিক ততটাই ক্ষয় হচ্ছে। বিপাকে পড়ছি। সেই হিসেবটা না করে রাজনৈতিক দলের নেতার গালমন্দ করছি। এই বিকলাঙ্গ মানসিকতা ত্যাগ করলেই অনেক পরিবর্তন দেশের ও জনগনের।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad