ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা আজকাল একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা, কিন্তু যদি নিয়ন্ত্রণে না রাখা হয়, তাহলে এটি জয়েন্টে ব্যথা এবং আর্থ্রাইটিসের মতো অন্যান্য সমস্যার কারণ হতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে পিউরিন ভেঙে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়। কিডনি যখন এটি সম্পূর্ণরূপে অপসারণ করতে অক্ষম হয়, তখন এটি রক্তে জমা হয় এবং গেঁটে বা জয়েন্টে ব্যথার মতো সমস্যা তৈরি করে। একটি সঠিক খাদ্য ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডের জন্য খাবার
১. কম পিউরিনযুক্ত ফল এবং শাকসবজি
শসা, টমেটো, ঝুচিনি, লাউ, সূক্ষ্ম লাউ, পালং শাক (পরিমিত পরিমাণে)
ফল: আপেল, পেয়ারা, চেরি, কমলা, পেঁপে, কলা। চেরি ইউরিক অ্যাসিড কমাতে খুবই কার্যকর বলে মনে করা হয়।
২. প্রচুর জল পান করুন
দিনে ৮-১০ গ্লাস জল পান করতে ভুলবেন না।
জল প্রস্রাবের মাধ্যমে ইউরিক অ্যাসিড বের করে দিতে সাহায্য করে।
৩. কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত দ্রব্য
টোনড মিল্ক, দই এবং বাটারমিল্ক
ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ, এগুলি শরীরে ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে।
৪. গোটা শস্য এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার
ওটস, বার্লি, বাদামী চাল এবং ওটমিল
ফাইবার ইউরিক অ্যাসিড শোষণে সাহায্য করে।
৫. সবুজ চা এবং লেবুর জল
সবুজ চায়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। লেবুর রস শরীরকে ক্ষারযুক্ত করে, অ্যাসিড কমায়।
উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডযুক্ত খাবার (উচ্চ ইউরিক অ্যাসিডযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা)
১. লাল মাংস এবং অঙ্গের মাংস
লিভার, কিডনি, মাটন, গরুর মাংস, মুরগির পায়ের টুকরো ইত্যাদিতে পিউরিনের পরিমাণ বেশি থাকে। এগুলো দ্রুত ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ায়।
২. সামুদ্রিক খাবার এবং মাছ
সার্ডিন, অ্যাঙ্কোভি, টুনা এবং স্যামনের মতো মাছ এড়িয়ে চলুন।
৩. অ্যালকোহল এবং বিয়ার
বিয়ারে পিউরিন থাকে এবং অ্যালকোহল কিডনির কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। এর ফলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিড জমা হয়।
৪. মিষ্টি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার
ঠান্ডা পানীয়, প্যাকেটজাত জুস, ক্যান্ডি, কেক এবং বেকারির জিনিসপত্র এড়িয়ে চলুন। এগুলিতে ফ্রুক্টোজ সিরাপ থাকে, যা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ায়।
৫. উচ্চ পিউরিনযুক্ত ডাল এবং শাকসবজি
সপ্তাহে মাত্র ১-২ বার মসুর ডাল, কিডনি বিন, ছোলা, মটরশুঁটি এবং ইয়াম খান, অথবা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
এছাড়াও এই বিষয়গুলি মনে রাখবেন:
আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম করুন।
ব্যথা অনুভব করলে ঠান্ডা কম্প্রেস লাগান।
ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ (যেমন অ্যালোপিউরিনল) নিয়মিত খান।
দ্রষ্টব্য: যদি আপনার জয়েন্ট ফুলে যায়, আঙুলে তীব্র ব্যথা হয়, অথবা হাঁটতে অসুবিধা হয়, তাহলে এটি গাউটের লক্ষণ হতে পারে। অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

No comments:
Post a Comment