উত্তরবঙ্গের টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়াল রাজ্য সরকার। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক সুরক্ষায় রাজ্য চালু করেছে বিশেষ উদ্যোগ—বাংলা শস্য বিমা প্রকল্পে দ্রুত নাম নথিভুক্তির জন্য শুরু হয়েছে একাধিক বিশেষ শিবির। কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরা গ্রামাঞ্চলে গিয়ে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের নাম যাতে দ্রুত বিমায় অন্তর্ভুক্ত হয়, তা নিশ্চিত করছেন।
নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগে উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় ব্যাপক ফসল ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ হিসেব এখনও পাওয়া যায়নি, প্রাথমিক রিপোর্টে দেখা গেছে শাকসবজি, ধান ও ভুট্টা চাষে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে। বহু জায়গায় জমি এখনো জলমগ্ন।
সরকারি হিসেবে, প্রায় ১৮ হাজার ৪৫২ হেক্টরেরও বেশি কৃষিজমি জলের তলায় চলে গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে জলপাইগুড়ি জেলায়, যেখানে প্রায় ১৩ হাজার ৯৫৩ হেক্টর জমি প্লাবিত। আলিপুরদুয়ারে প্রায় ৩,৪৯৫ হেক্টর, দার্জিলিংয়ে ৫৮২ হেক্টর এবং কোচবিহারে ৪২২ হেক্টর জমি জলের নিচে রয়েছে বলে জানা গেছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী ও কৃষি বিশেষজ্ঞ প্রদীপ মজুমদার বুধবার উত্তরবঙ্গে গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি গ্রাম পরিদর্শন করে স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ক্ষতির বিস্তারিত রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীকে জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে সাধারণ মানুষ যাতে বাজারে ন্যায্যমূল্যে শাকসবজি ও খাদ্যসামগ্রী পান, তার জন্য রাজ্য সরকার অতিরিক্ত ২৯টি চলমান সুফল বাংলা স্টল চালু করেছে। কৃষি বিপণন দপ্তরের উদ্যোগে বিভিন্ন সুফল বাংলা কেন্দ্র থেকে দুর্গত এলাকায় পাঠানো হয়েছে প্রায় ১৫০ কুইন্টাল আলু ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী। একই সঙ্গে ত্রাণশিবিরগুলিতে নিয়মিত সরবরাহ বজায় রাখতে প্রশাসন বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছে।
সরকারি মহলের বক্তব্য, রাজ্য এখন ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে। সেই অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ ও সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

No comments:
Post a Comment