ন্যাশনাল ডেস্ক, ২৭ অক্টোবর ২০২৫: বর্তমান যুগে মোবাইল-ইন্টারনেট ছাড়া জীবন কল্পনাতীত। একদিকে যেমন জীবন সহজ হয়ে উঠেছে, অন্যদিকে সক্রিয় হয়েছে প্রতারকরাও। নিত্যনতুন প্রতারণার ফাঁদ ফাঁদছে দুষ্কৃতকারীরা। উত্তরপ্রদেশে ঘটেছে এমনই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। উত্তর প্রদেশের বিজনরে বিয়ের কার্ডের নামে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয় এক এপিকে ফাইল। আর সেটি ডাউনলোড করতেই ১০০-র বেশি জনের মোবাইল হ্যাক হয়ে যায়। এমনকি অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যায় ২,৭০০ টাকাও। এই ঘটনায় জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এই বিষয়ে মহিলা কৃষক সেলের জেলা সভাপতি উপমা চৌহান অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ বর্তমানে বিষয়টি তদন্ত করছে এবং ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, একটি কৃষক সংগঠনের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের একজন সদস্য ভুল করে এপিকে ফাইলটি ফরোয়ার্ড করেছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন এটি একটি বিয়ের কার্ড। মহিলা কৃষক সেলের জেলা সভাপতি উপমা চৌহান এটি ডাউনলোড করেন এবং তাঁর মোবাইল ফোন হ্যাক হয়ে যায়। এরপর সাইবার প্রতারকরা ফাইলটি উপমা চৌহানের পরিচিতদের মোবাইল ফোনেও ফরোয়ার্ড করে দেয়। আর যারাই এটি ডাউনলোড করেন, তাঁদের মোবাইলও হ্যাক হয়ে যায়।
ধামপুরের বাসিন্দা সতীশ কুমার জানান, তিনিও ফাইলটি ডাউনলোড করেছিলেন, যার পরে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ২,৭০০ টাকা উধাও হয়ে যায়। একজন সাংবাদিক- দীনেশ প্রজাপতি জানান যে, যেহেতু ফাইলটি একজন পরিচিত ব্যক্তির নম্বর থেকে এসেছিল, তাই তিনিও এটি ডাউনলোড করেছিলেন, যার ফলে তাঁর মোবাইলও হ্যাক হয়ে যায় এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে বার্তা যেতে থাকে। বাধ্য হয়ে তাঁকে তাঁর ফোনটি বন্ধ করে ফর্ম্যাট করতে হয়। ব্লক সভাপতি অমরপাল সিং, সাংবাদিক ধীরেন্দ্র শেখাওয়াত এবং গজরাজ সহ আরও বেশ কয়েকজন এই হ্যাকিংয়ের শিকার হন।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে কয়েকজন তো তাঁদের সমস্ত মোবাইল ডেটা হারিয়েছেন। তবে, ২,৭০০ টাকা ছাড়া তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে আর কোনও টাকা উধাওয়ের খবর পাওয়া যায়নি। উপমা চৌহান সাইবার পুলিশ হেল্পলাইনে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ধামপুরের সিও অভয় কুমার পাণ্ডে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এই ঘটনার পর, মানুষ রীতিমতো আতঙ্কে। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপে আসা বিয়ের কার্ড ডাউনলোড করতেও ভয় পাচ্ছেন।
এই ঘটনা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যে, মোবাইল-ইন্টারনেট ব্যবহারে সামান্য একটি ভুল কতবড় সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে। অতএব সতর্ক আমাদের সকলকেই থাকতে হবে। অযথা কোনও লিঙ্কে ক্লিক নয়। অপরিচিত নম্বর থেকে আসা ফোন-মেসেজ রিসিভ না করাই ভালো। এরপরেও কোনও রকম অসুবিধায় পড়লে নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করুন।

No comments:
Post a Comment