বন্ধু ফেলে চলে গেলে, তিন যুবকের নির্যাতনের শিকার মেডিক্যাল ছাত্রী! বাংলায় ফের নৃশংস গণধর্ষ-ণ কাণ্ড

কলকাতা, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২১:৫০:০১ : আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার রেশ এখনও পুরোপুরি কাটেনি। তার মধ্যেই ফের নয়া নৃশংসতা। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের চিকিৎসক ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

শনিবার পুলিশ জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম বর্ধমান জেলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা ওড়িশার এক মেডিক্যাল ছাত্রীকে গণধর্ষণ করেছে। ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে এই ঘটনা ঘটে। তারা জানিয়েছেন, দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রী তার এক বন্ধুর সাথে ডিনার করতে বেরিয়েছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, ছাত্রীর বন্ধু তাকে একা রেখে যাওয়ার সময় তিনজন অজ্ঞাত ব্যক্তি এসে তাকে গণধর্ষণ করে।

একজন পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ওড়িশার জলেশ্বরের বাসিন্দা ওই মেডিক্যাল ছাত্রীকে নিকটবর্তী একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। "আমরা ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছি," তিনি বলেন। সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে ছাত্রীর বাবা-মা জানিয়েছেন যে তাদের মেয়ের বন্ধুদের কাছ থেকে ফোন পেয়ে তারা আজ সকালে দুর্গাপুরে পৌঁছেছেন।

ছাত্রীর মা অভিযোগ করেছেন যে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে তার মেয়েকে গণধর্ষণ করা হয়েছে, যখন সে তার এক বন্ধুর সাথে ডিনার করতে বেরিয়েছিল। ছাত্রীর বাবা বলেন, "আমরা তার বন্ধুদের কাছ থেকে একটি ফোন পেয়েছিলাম, যারা আমাদের ঘটনাটি সম্পর্কে জানিয়েছিল। আমরা আজ সকালে এখানে এসে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি শুনেছি যে কলেজটি ভালো শিক্ষা দেয়, তাই আমরা আমাদের মেয়েকে এখানে মেডিকেল পড়তে পাঠিয়েছি।"

একজন পুলিশ আধিকারিক বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে শুক্রবার রাত ৮-৮:৩০ টার দিকে ছাত্রীটি তার বন্ধুর সাথে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। আধিকারিক বলেন, "তিনজন অজ্ঞাত ব্যক্তি এসে পৌঁছালে তার বন্ধু তাকে একা রেখে যায়। তারা তার ফোন কেড়ে নেয় এবং ক্যাম্পাসের বাইরের একটি জঙ্গলে নিয়ে যায় এবং তাকে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি কাউকে জানালে তাকে ভয়াবহ পরিণতির হুমকি দেওয়া হয়।"

তিনি বলেন, অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোন ফেরত দেওয়ার জন্য ডাক্তারের কাছে টাকাও দাবী করে। আধিকারিক বলেন, ছাত্রীর বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, "গত রাতে আমরা ভুক্তভোগীর বন্ধুর সাথে কথা বলেছি। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করছি।" "প্রমাণ সংগ্রহের জন্য একটি ফরেনসিক দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে।" জাতীয় মহিলা কমিশনের (এনসিডব্লিউ) একটি দল দুর্গাপুরে যাচ্ছে নির্যাতিতা এবং তার বাবা-মায়ের সাথে দেখা করতে।

এনসিডব্লিউ সদস্য অর্চনা মজুমদার বলেন, "বাংলায় নারীর বিরুদ্ধে অপরাধ বাড়ছে। পুলিশ এই ধরনের ঘটনায় কোনও সক্রিয় পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করার এবং এই ধরনের অপরাধের বৃদ্ধি বন্ধে একসাথে কাজ করার জন্য অনুরোধ করব।" এদিকে, একজন ঊর্ধ্বতন আধিকারিক বলেছেন যে রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগ শনিবার দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের কাছ থেকে একটি প্রতিবেদন চেয়েছে। "আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি প্রতিবেদন চেয়েছি। আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব," তিনি বলেন।