'৫ শব্দে তাঁদের কীর্তি---', মুজাফফরপুরে আরজেডিকে নিশানা প্রধানমন্ত্রী মোদীর - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday, October 30, 2025

'৫ শব্দে তাঁদের কীর্তি---', মুজাফফরপুরে আরজেডিকে নিশানা প্রধানমন্ত্রী মোদীর


ন্যাশনাল ডেস্ক, ৩০ অক্টোবর ২০২৫: দোরগোড়ায় বিহার বিধানসভা নির্বাচন। জোরদার প্রচারে নেমেছে সব রাজনৈতিক দলগুলোই। এই পর্বে প্রচারণার জন্য বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) মুজাফফরপুরে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এখানে এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি কংগ্রেস এবং আরজেডিকে তীব্র নিশানা করেন। আরজেডির শাসনকে গুন্ডারাজত্ব তকমা দিয়ে তিনি পাঁচ শব্দে লালু প্রসাদ যাদবের দলের কীর্তির কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী আরজেডির শাসনকে হিংস্রতা, নিষ্ঠুরতা, তিক্ততা, কুশাসন এবং দুর্নীতি হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেন।


বিশাল জনসমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, এনডিএ মানে সুশাসন, এনডিএ মানে জনসেবা এবং এনডিএ মানে বিকাশের নিশ্চয়তা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সমাবেশে বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে যে, বিহারে আবারও এনডিএ সরকার গঠিত হচ্ছে।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছট মহাপর্বকে মানবতার এক মহা উৎসব হিসেবে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তিনি নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এটি প্রতিটি বিহারী এবং প্রতিটি ভারতীয়ের জন্য গর্বের বিষয় হবে। তিনি বলেন, "ছট মহাপর্বের পর এটি আমার প্রথম জনসভা। ছট মহাপর্ব বিহার এবং দেশের গর্ব। ছট মহাপর্ব দেশ ও বিশ্বে পালিত হয়। আমরা যখন ছট গান শুনি, তখন আমরা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ি। ছট মাইয়া পূজায় মায়ের প্রতি ভক্তি থাকে। ছট মাইয়া পূজায় সাম্য, স্নেহ এবং সামাজিক সম্প্রীতি থাকে। ছট মাইয়া পূজা আমাদের ভাগ করা ঐতিহ্যেরও একটি উদযাপন। অতএব, আমাদের সরকারের প্রচেষ্টা হল বিশ্বও এই মূল্যবোধ থেকে শিক্ষা নিক।"



সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, "কংগ্রেস এবং আরজেডির লোকেরা ছঠি মাইয়াকে অপমান করছে। নির্বাচনে ভোট পেতে কেউ কি কখনও ছঠি মাইয়াকে অপমান করতে পারে? বিহার কি এমন অপমান সহ্য করবে? ভারত কি তা সহ্য করবে? আমার মায়েরা যারা নির্জলা উপবাস করেন, তাঁরা কি তা সহ্য করবেন? আরজেডি-কংগ্রেসের লোকেরা এত নির্লজ্জভাবে কথা বলছেন। তাঁদের কাছে ছঠি মাইয়াকে পূজা করা একটা নাটক, একটা কৌশল, আপনারা কি এমন লোকদের শাস্তি দেবেন না? যে মা-বোনেরা এত দীর্ঘ নির্জলা উপবাস পালন করেন, যাঁরা গঙ্গায় দাঁড়িয়ে সূর্যদেবকে অর্ঘ্য দেন, তাঁরা আরজেডি-কংগ্রেসের চোখে নাটক করেন।"


তিনি বলেন, "বিহারের মা-বোনেরা কি ছঠি মাইয়ার এই অপমান সহ্য করবে? ছঠি মাইয়ার প্রতি বিশ্বাসী প্রতিটি ব্যক্তির প্রতি এটি অপমান। ছট পূজার এই অপমান বিহার ভুলবে না, কেবল নির্বাচনেই নয়, শত শত বছর ধরে। যাঁরা ছঠি মাইয়ার পূজা করেন, তাঁরা শত শত বছর ধরে এই অপমান ভুলবেন না। আমাদের বিহার আত্মমর্যাদার ভূমি। যারা ছট পূজাকে গালি দেওয়ার কাজ করেছে, বিহার এমন লোকদের কখনও ক্ষমা করবে না।"


প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, "আরজেডি-কংগ্রেস কখনই বিহারকে উন্নত করতে পারে না। এই দলগুলি বছরের পর বছর ধরে বিহারে একছত্র শাসন করেছে, কিন্তু তারা কেবল আপনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আরজেডি-কংগ্রেসের পরিচয় পাঁচ জিনিসে। কী দিয়েছে আরজেডি-কংগ্রেসেরা? কী দিয়েছে জঙ্গলরাজওয়ালারা? আমি ৫ শব্দে‌ এদের কীর্তির কথা বলতে চাই - হিংস্রতা, নিষ্ঠুরতা, তিক্ততা, কুশাসন এবং দুর্নীতি। যেখানে হিংস্রতা, নিষ্ঠুরতার রাজত্ব, সেখানে আইন মরে যায়। যেখানে তিক্ততা থাকে, সেখানে সমাজে সদ্ভাব মুশকিল। যেখানে কুশাসন আছে, সেখানে উন্নয়নের কোনও চিহ্ন থাকে না। যেখানে দুর্নীতি আছে, সেখানে সামাজিক ন্যায়বিচার মেলে না। দরিদ্রদের অধিকার লুট করা হয়, শুধুমাত্র কয়েকটি পরিবারই ফুলে-ফেঁপে ওঠে। এমন লোকেরা কখনই বিহারের ভালো করতে পারে না।"


প্রধানমন্ত্রী বলেন, "বিহারের উন্নতির জন্য, এর উদ্যোগ, শিল্প প্রয়োজন এবং শিল্পের জন্য, জমি, বিদ্যুৎ, সংযোগ এবং আইনের শাসন প্রয়োজন। একবার ভাবুন, যাদের জমি দখলের ইতিহাস রয়েছে তারা কি কোনও শিল্পকে জমি দেবে? যারা বিহারকে লণ্ঠনের যুগে রেখেছিল তারা কি বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে? যারা রেলপথ লুট করেছিল তারা কি বিহারে সংযোগ উন্নত করতে পারবে? যারা দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারির রেকর্ড ভেঙেছে তারা কি আইনের শাসন আনতে পারবে? যদি আমরা জঙ্গলরাজের দিনগুলি মনে করি, তাহলে আমরা কল্পনা করতে পারি পরিস্থিতি কতটা বিপজ্জনক ছিল।"


তিনি বলেন, "মুজাফফরপুরের মানুষ, আপনারা আরজেডি সরকারের আমলে ঘটে যাওয়া গোলু অপহরণের ঘটনাটি কখনও ভুলতে পারবেন না। ২০০১ সালে, এই শহরেই, অপরাধীরা প্রকাশ্য দিবালোকে স্কুলে যাওয়ার পথে একটি ছোট ছেলেকে অপহরণ করে এবং বিনিময়ে প্রচুর টাকা দাবী করে। আর যখন টাকা দিতে পারেনি, তখন এই আরজেডির লোকজন ছোট্ট ছেলেটিকে টুকরো টুকরো করে ফেলে।"

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad