অতি গভীর নিম্নচাপে রূপ নিল ঘূর্ণিঝড় ‘মান্থা’! রাজ্যের সব জেলায় জারি সতর্কতা, ধেয়ে আসছে ১১০ কিমি বেগে - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Monday, October 27, 2025

অতি গভীর নিম্নচাপে রূপ নিল ঘূর্ণিঝড় ‘মান্থা’! রাজ্যের সব জেলায় জারি সতর্কতা, ধেয়ে আসছে ১১০ কিমি বেগে

 


কলকাতা, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:৩০:০১ : সোমবার ভোররাতেই দক্ষিণ-পূর্ব ও সংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে ‘মান্থা’। বর্তমানে এটি পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মঙ্গলবার অর্থাৎ ২৮ অক্টোবর ‘মান্থা’ একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে এবং সন্ধ্যা বা রাতে অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়ায় আছড়ে পড়বে। ল্যান্ডফলের সময় ঘন্টায় সর্বোচ্চ হাওয়ার বেগ থাকতে পারে প্রায় ১১০ কিলোমিটার।

ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ও মধ্য বঙ্গোপসাগরে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। আজ থেকেই উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরেও প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ২৭ অক্টোবরের মধ্যে গভীর সমুদ্র থেকে উপকূলে ফিরে আসতে হবে। এছাড়া, ২৮ অক্টোবর থেকে বাংলার উপকূলবর্তী এলাকাতেও মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

আবহাওয়া দফতরের নির্দেশ, দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় পাকা ফসল দ্রুত কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টির জেরে নীচু এলাকায় জল জমতে পারে, শহরের আন্ডারপাসগুলিতেও জলাবদ্ধতার আশঙ্কা রয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় ভারী বৃষ্টির কারণে দৃশ্যমানতা কমতে পারে।

আজ সোমবার সকালে শহরের আকাশ ছিল ঝলমলে, তবে বেলা বাড়লে আকাশ আংশিক মেঘলা হবে। দিনভর মূলত পরিষ্কার থাকলেও সোমবার রাত থেকেই আবহাওয়ার পরিবর্তন শুরু হবে। মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে রাজ্যের একাধিক জেলায়। বুধবার বা বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গ ও কলকাতায় বৃষ্টির তীব্রতা আরও বাড়বে, সঙ্গে থাকতে পারে ঘন্টায় ৩০–৪০ কিমি বেগে দমকা হাওয়া।

আজ শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৪.০° সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ৩২.৫° সেলসিয়াস। আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৬৮ থেকে ১০০ শতাংশের মধ্যে। গত ২৪ ঘন্টায় রেকর্ড হয়েছে ৩৯ মিমি বৃষ্টি। আগামী কয়েকদিন কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

ছট পুজোর দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার ভোরে সামান্য বৃষ্টি হতে পারে, তবে জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি রয়েছে।

মঙ্গলবারে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টি, সঙ্গে ৩০–৫০ কিমি বেগে দমকা হাওয়া।বুধবারে হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে ভারী বৃষ্টি। বৃহস্পতিবারে পুরুলিয়া, বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদে ভারী বৃষ্টি। শুক্রবারে বীরভূম ও মুর্শিদাবাদে ভারী বৃষ্টি, দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে বজ্রসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি। শনিবারে বৃষ্টি কমবে, কেবল বিক্ষিপ্ত বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে।

দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের পার্বত্য এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। বুধবার মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর এবং জলপাইগুড়িতে বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার মালদা, উত্তর দিনাজপুর ও জলপাইগুড়িতে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। শুক্রবার উত্তরবঙ্গের প্রায় সব জেলায় ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা, বিশেষ করে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, মালদা ও দুই দিনাজপুরে। শনিবার বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।

‘মান্থা’র প্রভাবে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে প্রবল বৃষ্টির পাশাপাশি ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কর্নাটক, রাজস্থান, গুজরাত, কেরল, মাহে, ওড়িশা, রয়েলসীমা, তামিলনাড়ু, পন্ডিচেরি ও করাইকালে। এছাড়া ছত্তীসগড়, কর্নাটক, কঙ্কন-গোয়া ও মধ্যপ্রদেশ সংলগ্ন এলাকাতেও ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad