উত্তর ২৪ পরগনা, ৩০ অক্টোবর ২০২৫: এসআইআর চালুর পরই আতঙ্কিত বনগাঁ মহকুমার উদ্বাস্তু-মতুয়া সম্প্রদায়ের একাংশের মানুষ। ইতিমধ্যেই তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন মতুয়া ঠাকুর বাড়ির অন্যতম সদস্য শান্তনু ঠাকুর। রাজ্যে এসআইআর চালুর ঘোষণার পর থেকেই উদ্বাস্তু ও মতুয়া সম্প্রদায়ের একাংশের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। নাগরিকত্ব নিয়ে অনিশ্চয়তা ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তবে সেই পরিস্থিতিতে কিছুটা হলেও আশ্বস্ত করছেন শান্তনু ঠাকুর।
তাঁর বক্তব্য, সিএএ-এর মাধ্যমে উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তাই আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। শান্তনু ঠাকুরের এই বার্তা পাওয়ার পর থেকেই মতুয়া সম্প্রদায়ভুক্ত বহু মানুষ সিএএ ফর্ম পূরণের উদ্যোগ নিচ্ছেন। বনগাঁর বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়াও বলেন, 'যারা রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী, তাদের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ আছে। কিন্তু উদ্বাস্তুদের কোনও ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নেই।'
তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য এই ইস্যুতে বিজেপিকে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার অভিযোগ করেছে। শাসক দলের দাবী, মানুষকে ভয় দেখিয়ে রাজনৈতিক লাভ তুলতে চাইছে বিজেপি। তবে বিজেপির মতে, উদ্বাস্তু ও মতুয়া সম্প্রদায়ের নাগরিকত্বের অধিকার নিশ্চিত করতে সিএএ-ই একমাত্র পথ।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, বহু মানুষ ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কেন্দ্রে গিয়ে সিএএ ফর্ম পূরণ করছেন। ২০০২ সালের আগে এ দেশে আসলেও অনেকেরই সেসময় প্রয়োজনীয় নথি তৈরি হয়নি। পরবর্তীতে পরিচয়পত্র থাকলেও ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকায় বিভ্রান্তি দেখা দিচ্ছে। তাই অনেকেই আগেভাগে নাগরিকত্বের আবেদন জমা দিতে চাইছেন।
বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, গোটা প্রক্রিয়াটি এখনও অনেকের কাছেই স্পষ্ট নয়। সেই অজ্ঞতার জেরেই বাড়ছে বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক। তবুও শান্তনু ঠাকুরের আশ্বাসে কিছুটা ভরসা ফিরে পেয়েছেন মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। শান্তনুর কথায়, ভারতের নাগরিকত্ব পেতে মতুয়ারা কোনও সমস্যায় পড়লে ঠাকুরবাড়ি তাঁদের পাশে থাকবে।
রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে এই নিয়ে চলছে তুমুল তরজা- এসআইআর ও সিএএ নিয়ে কে সত্য বলছে, আর কে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, তা নিয়ে জনমত বিভক্ত। তবে সাধারণ মানুষের প্রশ্ন একটাই, 'নাগরিকত্বের লড়াইয়ে এবার সত্যিই কি শেষ হবে উদ্বাস্তুদের দুঃশ্চিন্তা?'

No comments:
Post a Comment