বিনোদন ডেস্ক, ২১ অক্টোবর ২০২৫: ডেঙ্গু-ম্যালেরিয়ার মত রোগ ছড়ায় মশা। ছোট্ট এই পতঙ্গটি স্বাভাবিক ভাবেই সকলের অপছন্দের তালিকায়। কিন্তু ভাবুন তো, এমন একটি কারখানা যেখানে মানুষের সমস্যা তৈরি করে এই মশাটিই তৈরি হয়! হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। এমনই কারখানা রয়েছে ব্রাজিলে। ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধের জন্য এখানে একটি কারখানা তৈরি করা হয়েছে। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ ডেঙ্গুর মতো রোগে ভোগেন, কিন্তু এখন ব্রাজিল একটি নতুন উপায় খুঁজে পেয়েছে। সাও পাওলো রাজ্যের ক্যাম্পিনাসে বিশ্বের বৃহত্তম মশার কারখানা খোলা হয়েছে, যেখানে প্রতি সপ্তাহে ১ কোটি ৯০ লক্ষ মশা তৈরি হয়। এই মশাগুলি বিশেষ কারণ এতে এমন একটি ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যা ডেঙ্গু ভাইরাসের বিস্তার রোধ করে। এই কারখানার খবর ভাইরাল হচ্ছে এবং মানুষ এটা ভেবে অবাক যে, মশা কীভাবে রোগ প্রতিরোধ করতে পারে!
ব্রাজিলের এই মশার কারখানাটি ১,৩০০ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। শ্রমিকরা দিনরাত কাজ করে মশাদের প্রজননের জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করার জন্য। কারখানায় উৎপাদিত মশা হল এডিস এজিপ্টি, যা ডেঙ্গুর বাহক। তবে, এগুলোকে ওলবাচিয়া নামক একটি বিশেষ ব্যাকটেরিয়ায় সংক্রামিত করা হয়। এই ব্যাকটেরিয়া মশার শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাসের সংখ্যা বৃদ্ধিতে বাধা দেয় এবং যখন এই মশাগুলি মানুষকে কামড়ায়, তখন ডেঙ্গু সংক্রমণের ঝুঁকি দূর হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, যখন এই মশাগুলি নতুন মশা তৈরি করে, তখন এই ব্যাকটেরিয়া এর বংশধরদের কাছে চলে যায় না।
কারখানাতে হাজার হাজার ট্রেতে মশা উৎপাদন করা হয়। প্রথমে, জল ভর্তি ট্রেতে লার্ভা তৈরি হয়। এই লার্ভা ডিম ফুটে বের হয়ে গেলে, সেগুলো খাঁচায় রাখা হয়। সেখানে এগুলোকে খাবার দেওয়া হয়। পুরুষদের জন্য মিষ্টি দ্রবণ এবং স্ত্রীদের জন্য রক্ত (মানুষের ত্বকের মতো একটি ব্যাগে)। খাঁচায় চার সপ্তাহ ধরে মশারা বাস করে, প্রজনন করে এবং ডিম পাড়ে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও দেখে লোকেরাও অবাক যে, মশা কীভাবে মানুষকে বাঁচাতে পারে! বিজ্ঞানীরা এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম ও অনন্য উদ্যোগ বলে মনে করছেন। ব্রাজিল দেখিয়েছে যে, বিজ্ঞান এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রোগও প্রতিরোধ করা যেতে পারে। একজন নেটিজেন লিখেছেন, "এই ধরণের প্রয়োগই সংসারকে বাঁচিয়ে রেখেছে।" অন্য একজন ইউজার লিখেছেন, "এই কারণেই তো ইউরোপ এত উন্নতি করছে।"
No comments:
Post a Comment