শীতের আবহাওয়া আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর প্রভাব ফেলে। এই ঋতুতে মানুষ প্রায়শই সর্দি, পেটের সমস্যা এবং রক্তে শর্করার ওঠানামার সাথে লড়াই করে। মেথি, যা প্রায়শই কেবল রুটি বা পরোটার স্বাদ বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়, এই সমস্ত সমস্যার জন্য একটি ঔষধ। আয়ুর্বেদ অনুসারে, মেথি একটি "গরম" ভেষজ, এবং এর ব্যবহার ভাত এবং কাফ দোষের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি কেবল শরীরকে উষ্ণ করে না বরং হজমশক্তিও শক্তিশালী করে। আধুনিক বিজ্ঞানও মেথিকে স্বাস্থ্যের জন্য একটি আশীর্বাদ বলে মনে করে। এর পাতায় উপস্থিত ফাইবার, প্রোটিন, ভিটামিন এবং অন্যান্য উপাদান অসংখ্য উপকারিতা প্রদান করে। রক্তে শর্করা: শীতকালে অনেকেই রক্তে শর্করার হঠাৎ বৃদ্ধি অনুভব করেন। মেথি পাতায় এমন যৌগ থাকে যা ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। আয়ুর্বেদে এটি একটি প্রমাণিত প্রতিকার হিসাবে বিবেচিত হয় কারণ এটি শরীরকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করে। এটি ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্ক সকলের জন্য একটি নিরাপদ এবং প্রাকৃতিক প্রতিকার। পাচনতন্ত্র: ঠান্ডা আবহাওয়া প্রায়শই পেটে ভারী ভাব বা ফোলাভাব অনুভব করে। মেথি পাতার পুষ্টি উপাদানগুলি অন্ত্র পরিষ্কার করতে এবং বদহজম বা অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। আয়ুর্বেদের মতে, এটি অ্যাসিডিটি এবং বাত-সম্পর্কিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে, অন্যদিকে বিজ্ঞান পরামর্শ দেয় যে মেথি পাতায় থাকা দ্রবণীয় ফাইবার এবং এনজাইমগুলি মসৃণ হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে। সর্দি-কাশি: মেথি পাতায় প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। আয়ুর্বেদের মতে, এটি কফ এবং বাত দোষের ভারসাম্য বজায় রাখে, যা শরীরকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম করে। এই কারণেই শীতকালে মেথির স্যুপ বা পরোটা খেলে সর্দি-কাশির সম্ভাবনা কমে। ওজন নিয়ন্ত্রণ: মেথি পাতায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা রাখতে সাহায্য করে। এটি ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা কমায়। আয়ুর্বেদে, এটিকে সুষম খাদ্যের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয় কারণ এটি শরীরে শক্তি বজায় রাখে।

No comments:
Post a Comment