ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ভুল খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে, কিছু ফলের গ্লাইসেমিক সূচক (GI) কম থাকে এবং এতে থাকা ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করতে পারে। পেয়ারা এমনই একটি উপকারী ফল।
পেয়ারা পুষ্টিকর, কম ক্যালোরিযুক্ত এবং ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিরাপদ বলে বিবেচিত হয় (তবে সর্বদা ডাক্তারের পরামর্শে)।
পেয়ারাকে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কেন উপকারী বলে মনে করা হয়?
১. কম গ্লাইসেমিক সূচক
পেয়ারার জিআই কম থাকে, যার অর্থ এটি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি করে না।
এটি ধীরে ধীরে গ্লুকোজ নিঃসরণ করে, স্থিতিশীল রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখে।
২. ফাইবার সমৃদ্ধ
পেয়ারা খাদ্যতালিকাগত ফাইবার সমৃদ্ধ, যা:
হজম উন্নত করে
কার্বোহাইড্রেট শোষণকে ধীর করে
চিনির বৃদ্ধি রোধ করতে সাহায্য করে
উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী বলে মনে করা হয়।
৩. ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের চমৎকার উৎস
পেয়ারায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রদাহ কমাতে এবং শরীরকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীদের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বৃদ্ধি পায়, তাই এই ফলগুলি উপকারী বলে বিবেচিত হয়।
ডায়াবেটিসে পেয়ারা কীভাবে খাবেন?
১. খোসা ছাড়া
কিছু বিশেষজ্ঞ ডায়াবেটিস রোগীদের খোসা ছাড়া পেয়ারা খাওয়ার পরামর্শ দেন, কারণ খোসায় বেশি ফাইবার থাকে, যা কিছু লোকের পেট ফুলে যেতে পারে।
২. সকাল বা সন্ধ্যার নাস্তা হিসেবে
খালি পেটে বা রাতে ফল না খাওয়াই ভালো।
এটি খাবারের মাঝামাঝি সময়ে নাস্তা হিসেবে খাওয়া যেতে পারে।
৩. একবারে বেশি পরিমাণে এড়িয়ে চলুন
দিনে একটি মাঝারি আকারের পেয়ারা যথেষ্ট।
ডায়াবেটিসের জন্য অন্যান্য উপকারী ফল
আপেল
নাশপাতি
বেরি (স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি)
কিউই
কমলা
সকলের জিআই কম এবং ফাইবার বেশি থাকে।
কখন সাবধানতা অবলম্বন করবেন?
যদি রক্তে শর্করার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে ওঠানামা করে
যদি গ্যাস বা পেট ফাঁপা সমস্যা হয়
যদি কোনও ডাক্তার কোনও নির্দিষ্ট ফলের বিরুদ্ধে পরামর্শ দেন
ডায়াবেটিসে কোনও ফল অন্তর্ভুক্ত করার আগে একজন ডাক্তার বা ডায়েটিশিয়ানদের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ।
পেয়ারা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি উপকারী ফল হিসাবে বিবেচিত হয় কারণ এর কম জিআই, উচ্চ ফাইবার এবং প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। সঠিক পরিমাণে, সঠিক সময়ে এবং ডাক্তারের পরামর্শে এটি গ্রহণ করলে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

No comments:
Post a Comment