শীতকাল আসার সাথে সাথে তাপমাত্রা দ্রুত হ্রাস পায়, যা সরাসরি হৃদপিণ্ডের উপর প্রভাব ফেলে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে, পূর্বে বিদ্যমান হৃদরোগ, বয়স্ক, ডায়াবেটিস রোগী এবং উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই, ঠান্ডা মৌসুমে হৃদরোগের স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। আসুন জেনে নেওয়া যাক কেন তাপমাত্রা হ্রাস হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
ঠান্ডা ঋতুতে হৃদরোগের সাথে সম্পর্কিত ছোটখাটো লক্ষণগুলিও কখনই উপেক্ষা করা উচিত নয়। সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হল বুকে ব্যথা বা ভারী বোধ, যা বাম হাত, কাঁধ বা পিঠে ছড়িয়ে পড়তে পারে। শ্বাসকষ্ট, হালকা মাথা ঘোরা, অতিরিক্ত ক্লান্তি এবং ঘামও সতর্কতামূলক লক্ষণ। কিছু লোক চোয়াল বা ঘাড়ে ব্যথাও অনুভব করে। ঠান্ডা ঋতুতে লোকেরা প্রায়শই এই লক্ষণগুলিকে গ্যাস, দুর্বলতা বা সাধারণ ক্লান্তি ভেবে উপেক্ষা করে, যা পরিস্থিতি আরও খারাপ করতে পারে। হাঁটাচলা, সিঁড়ি বেয়ে ওঠা বা ঠান্ডা আবহাওয়ায় বাইরে বেরোনোর সময় যদি বুকে ব্যথা বেড়ে যায়, তাহলে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। প্রাথমিক রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা গুরুতর হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে।
ঠান্ডায় হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা বৃদ্ধির চারটি প্রধান কারণ কী?
রক্তনালী সংকুচিত হওয়া
রাজীব গান্ধী হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের ডাঃ অজিত জৈন ব্যাখ্যা করেন যে ঠান্ডা আমাদের শিরা সংকুচিত করে, যা রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। এটি হৃদপিণ্ডের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে এবং হৃদপিণ্ডের অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
রক্ত ঘন হয়ে যাওয়া
ঠান্ডায় শরীরের তাপমাত্রা কমে গেলে, রক্ত কিছুটা ঘন হয়ে যায়। এটি রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি বাড়ায়, যা হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের কারণ হতে পারে।
অক্সিজেনের অভাব
ঠান্ডায়, হৃদপিণ্ড শরীরকে উষ্ণ রাখার জন্য আরও কঠোর পরিশ্রম করে। এটি হৃদপিণ্ডের অক্সিজেনের চাহিদা বৃদ্ধি করে, যার ফলে দুর্বল হৃদপিণ্ডের মানুষদের ঝুঁকি বেশি থাকে।
হঠাৎ পরিশ্রম বা ব্যায়াম
ঠান্ডায় হঠাৎ গরম না হয়ে ভারী কাজ বা ব্যায়াম করলে হৃদপিণ্ডের উপর চাপ বৃদ্ধি পায়, যা অনিয়মিত হৃদস্পন্দন সৃষ্টি করতে পারে এবং অ্যাটাকের কারণ হতে পারে।
কীভাবে এটি প্রতিরোধ করবেন?
আপনার শরীর উষ্ণ রাখুন এবং ঠান্ডা পরিবেশে হঠাৎ সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
নিয়মিত আপনার রক্তচাপ, চিনি এবং কোলেস্টেরল পরীক্ষা করুন।
গরম না করে কঠোর ব্যায়াম বা কাজ করবেন না।
ধূমপান এড়িয়ে চলুন এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খান।
বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট বা চরম ক্লান্তি অনুভব করলে অবিলম্বে আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

No comments:
Post a Comment