বিয়েতে কনেই কেন আগে বরমালা পরায়? জানুন এর পেছনে লুকিয়ে থাকা শুভ-আধ্যাত্মিক বার্তা - Press Card News

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday, November 5, 2025

বিয়েতে কনেই কেন আগে বরমালা পরায়? জানুন এর পেছনে লুকিয়ে থাকা শুভ-আধ্যাত্মিক বার্তা



প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:০০:০১ : বিয়ে মানেই শুধু সঙ্গীত, মেহেন্দি আর ফোটোগ্রাফি নয়, এর প্রতিটি রীতির ভেতর লুকিয়ে থাকে গভীর অর্থ ও আধ্যাত্মিকতা। ঠিক যেমন বরমালা বা জয়মালা যা বিয়ের সবচেয়ে আনন্দময় ও হৃদয়স্পর্শী মুহূর্ত বলে মনে করা হয়। যখন কনে ও বর একে অপরের গলায় মালা পরিয়ে দেন, তখনই শুরু হয় তাদের বৈবাহিক জীবনের প্রথম ধাপ। কিন্তু কি আপনি জানেন, সবসময় কনেই কেন প্রথমে বরকে বরমালা পরায়? এই প্রশ্নের উত্তর শুধু ঐতিহ্যে নয়, রয়েছে শাস্ত্র ও বিশ্বাসের গহীনে।

শুধু রীতি নয়, গভীর বার্তা
ভারতীয় সংস্কৃতিতে বিবাহকে ঈশ্বর ও প্রকৃতির মিলনের প্রতীক বলা হয়। তাই বিবাহের প্রতিটি রীতিই শুভ ও অর্থপূর্ণ। জ্যোতিষ ও বাস্তু বিশেষজ্ঞ পণ্ডিত হিতেন্দ্র কুমার শর্মার মতে, বরমালা পরানোর এই প্রথার সম্পর্ক সরাসরি জড়িত আছে ভগবান শিব ও দেবী পার্বতীর বিবাহের সঙ্গে। বলা হয়, যেভাবে পার্বতী প্রথমে শিবকে মালা পরিয়েছিলেন, সেই প্রতীকেই আজও কনে প্রথমে বরকে বরমালা পরায়।

কেন কনে আগে বরকে মালা পরায়?

বিবাহের দিনকে সবচেয়ে পবিত্র দিন হিসেবে ধরা হয়। এদিন বর-কনেকে শিব-পার্বতীর রূপে পূজা করা হয়।

যখন কনে বরকে মালা পরায়, তখন সে মানসিকভাবে ঘোষণা করে — “আমি তোমায় আমার জীবনের সঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করছি।”

এরপর বর মালা পরিয়ে বলে, “আমি তোমাকেও পূর্ণ মন থেকে গ্রহণ করছি।”

শাস্ত্রমতে, এই মুহূর্তে মঙ্গল ও শুক্র গ্রহের শুভ প্রভাব সবচেয়ে প্রবল থাকে। তাই এই রীতি বিবাহের শুরুতেই পালন করা হয়, যাতে দাম্পত্য জীবন ভালোবাসা, সৌভাগ্য ও সুখে ভরে ওঠে।

বরমালা কেবল এক মুহূর্তের রীতি নয়, এটি সম্পর্কের ভিত্তি।

১. কনে যখন প্রথম মালা দেয়, তা বোঝায়, সে ভালোবাসা ও বোঝাপড়ার সূচনা করছে।

২. এই রীতিতে শেখানো হয়, সম্পর্ক টিকে থাকে অহংকারে নয়, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও মমতায়।

৩. এতে ইতিবাচক শক্তি প্রবেশ করে, যা দাম্পত্য জীবনে শান্তি ও ঐক্য আনে।

৪. যেমন শিব-পার্বতী সমতার ভিত্তিতে জীবন কাটিয়েছিলেন, তেমনি প্রতিটি যুগলকেও এই রীতি সেই শিক্ষা দেয়।

বরমালার গোপন বার্তা

যখন কনে বরকে মালা পরায়, তখন সেটা কেবল “হ্যাঁ” বলার উপায় নয়, বরং এক প্রতিশ্রুতি —
একসাথে চলার, বোঝাপড়ায় টিকে থাকার, আর সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেওয়ার।
এই রীতি শেখায়, বিবাহে কেউ বড় বা ছোট নয়, দু’জনই সমান। বরমালার প্রতিটি ফুলের মতোই সম্পর্কের রঙ, বিশ্বাস, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও একসাথে থাকার অঙ্গীকার।

বরমালার আধ্যাত্মিক তাৎপর্য

অনেকে বরমালাকে শুধু মজার মুহূর্ত ভেবে হেসে উড়িয়ে দেন, কিন্তু এটি আসলে দাম্পত্য জীবনের আধ্যাত্মিক সূচনা। এই মুহূর্তে যে ইতিবাচক শক্তি ও অনুভূতি জন্ম নেয়, সেটাই ভবিষ্যতের সম্পর্কের দিক নির্ধারণ করে।
তাই পরের বার যখন কোনও বিয়েতে বরমালার দৃশ্য দেখবেন, মনে রাখবেন, এটা শুধু হাসির সময় নয়, বরং দুটি আত্মার এক হয়ে যাওয়ার পবিত্র মুহূর্ত।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad