লাইফস্টাইল ডেস্ক, ১৩ নভেম্বর ২০২৫: সাইবার জালিয়াতির ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতারকরা আগের চেয়ে আরও বুদ্ধিমান এবং পরিণত হয়ে উঠছে। আর এতে করে বছরের পর বছর ধরে জমানো পুঁজি সুরক্ষিত রাখা কঠিন হয়ে উঠছে সাধারণ মানুষের জন্য। প্রতারকরা এখন কল, বার্তা, সোশ্যাল মিডিয়া, জাল অ্যাপ, চাকরির প্রস্তাব এবং ঋণের মতো কৌশলের মাধ্যমে মানুষকে ফাঁদে ফেলছে। এই বিষয়টি মাথায় রেখে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি পরামর্শ জারি করেছে যাতে প্রতারকদের এড়াতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, প্রতারকরা কী কী পদ্ধতি ব্যবহার করছে এবং কীভাবে এটা এড়াতে পারবেন-
১. ভুয়া ফোন কল বা ডিজিটাল অ্যারেস্ট
প্রতারকরা আপনাকে ফোন করে ভয় দেখানোর চেষ্টা করতে পারে। কখনও কখনও তারা পুলিশ অফিসার বা সরকারি আধিকারিক হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করে, আপনার বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেয় এবং বিনিময়ে টাকা দাবী করে। এছাড়াও কখনও কখনও তারা ব্যাংক কর্মচারী হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করে দাবী করে যে, আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এবং এটা পুনরায় চালু করার নামে তারা আপনার ব্যাংকের বিবরণ জানতে চায়।
কী করবেন: অবিলম্বে এই ধরণের কল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করুন এবং www.cybercrime.gov.in অথবা ১৯৩০ হেল্পলাইনে রিপোর্ট করুন।
২. বেশি লাভের প্রলোভন
কেউ যদি বেশি লাভের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কোনও অবৈধ ওয়েবসাইট বা অ্যাপে বিনিয়োগ করতে প্রলুব্ধ করে তবে সতর্ক থাকুন। আপনার অর্থ দ্বিগুণ বা ৩০ শতাংশ রিটার্নের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার মত যে কোনও স্কিমই একটি প্রতারণা।
কী করবেন: শুধুমাত্র SEBI-অনুমোদিত অ্যাপ বা প্ল্যাটফর্মে বিশ্বাস করুন। অজানা কল বা কোনও অচেনা অ্যাপে বিশ্বাস করবেন না।
৩. পার্ট টাইম চাকরির নামে প্রতারণা
অজানা নম্বর বা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ঘরে বসে হাজার হাজার টাকা আয় করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কল বা বার্তা যদি পান, তাহলে এটি কোনও চাকরি নয় বরং একটি প্রতারণা। এই কল বা বার্তাগুলি উপেক্ষা করুন; এগুলি আপনাকে কেবল পুরো কাজের প্রক্রিয়াটি অতিক্রম করতে বাধ্য করছে এবং তারপরে জমা দেওয়ার নামে আপনাকে প্রতারণা করছে।
৪. সাবধান! আপনার ওটিপি শেয়ার করলে অর্থের ক্ষতি হতে পারে
প্রতারকরা প্রায়শই ব্যাংক, কেওয়াইসি, অথবা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের নামে কল বা বার্তা পাঠায় এবং আপনাকে বোঝানোর চেষ্টা করে যে, আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অথবা আপনার একটি পার্সেল আছে। তারপর তারা একটি ওটিপি চায়। একবার কোনও ব্যক্তি তাঁর ওটিপি শেয়ার করলে, পতারকরা সেই তথ্য ব্যবহার করে তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও করে দেয়। সর্বদা মনে রাখবেন, কোনও ব্যাংক বা কোম্পানির প্রতিনিধি ফোন করে ওটিপি চায় না। অতএব, সতর্ক থাকুন এবং আপনার ওটিসি কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না।
৫. সহজ ঋণের প্রতারণা
আপনি যদি ৫ মিনিটের মধ্যে ঋণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অথবা কোনও অতিরিক্ত নথিপত্র ছাড়াই কোনও কল পান, তাহলে বিশ্বাস করবেন না। এই কলগুলি প্রতারনা একটি ফাঁদ। প্রতারকরা আপনার নথির অপব্যবহার করে আপনাকে ব্ল্যাকমেইল করে। মনে রাখবেন শুধুমাত্র একটি RBI/NBFC-যাচাইকৃত অ্যাপ থেকে ঋণ নিন এবং কখনও আপনার ব্যাঙ্কের বিবরণ কারও সাথে শেয়ার করবেন না।
৬. অজানা লিঙ্ক বা অ্যাপ জালিয়াতি
সোশ্যাল মিডিয়াতে, প্রতারকরা অজানা নম্বর থেকে বার্তা পাঠায়। যদি আপনি ইনস্টাগ্রাম, টেলিগ্রাম বা হোয়াটসঅ্যাপে কোনও অজানা লিঙ্ক পান, তাহলে তাতে ক্লিক করবেন না। শুধুমাত্র প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে কোনও অ্যাপ ডাউনলোড করুন।

No comments:
Post a Comment