প্রেসকার্ড নিউজ ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:২০:০১ : ইস্তাম্বুলে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান শান্তি আলোচনা এখন হুমকির আড়ালে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ একটি টিভি সাক্ষাৎকারে স্পষ্টভাবে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, যদি ইস্তাম্বুল শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হয়, তাহলে পাকিস্তান আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না।
এই বিবৃতি এমন এক সময়ে এসেছে যখন অক্টোবরে স্থগিত থাকা দুই দেশের মধ্যে আলোচনা আবার শুরু হয়েছে। এবার, যুদ্ধবিরতি বজায় রাখা এবং তালেবান-সমর্থিত জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।
পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে কাবুল সরকার তার ভূখণ্ডে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) কে আশ্রয় দিচ্ছে। এর ফলে দুই দেশের সীমান্তে ক্রমাগত উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাকিস্তানের সরকারি তথ্য (ডিজি আইএসপিআর) অনুসারে, ২০২৫ সালে এ পর্যন্ত ১,০৭৩ জন পাকিস্তানি সেনা এবং নিরাপত্তা কর্মী নিহত হয়েছে, যার ৭০-৮০% হামলা টিটিপির মতো বিদ্রোহী গোষ্ঠী দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। এটি পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর তীব্র চাপ সৃষ্টি করেছে। এই কারণেই ইসলামাবাদ এখন সংলাপের কথা বলছে, কিন্তু পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকিও দিচ্ছে।
খাজা আসিফের বক্তব্য পাকিস্তানের কৌশলগত দুর্বলতাও প্রকাশ করে। দেশটির বর্তমানে প্রায় ২৭০ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণ রয়েছে। অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক সংকট সামরিক বাহিনীর উপর ভারী বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন যে সামরিক পদক্ষেপের কথা বলা অভ্যন্তরীণ চাপ কমানোর এবং জনসাধারণের কাছে তার শক্তি প্রদর্শনের একটি উপায় হতে পারে। পাকিস্তান পারমাণবিক শক্তি হতে পারে, কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ সহ্য করার ক্ষমতা সীমিত।
ইস্তাম্বুলে চলমান আলোচনা বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে শেষ সংযোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যদি এই আলোচনাও ব্যর্থ হয়, তাহলে সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। অনেক প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ বলছেন যে পাকিস্তানের এখন হুমকির ভাষা ত্যাগ করা উচিত এবং স্থায়ী সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়া উচিত, কারণ শক্তি প্রয়োগ কেবল সাময়িক স্বস্তি প্রদান করে, স্থায়ী শান্তি নয়।

No comments:
Post a Comment