মন্দির আর ঘরের শিবলিঙ্গে কী থাকে পার্থক্য? জেনে নিন দু’টিরই ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক গুরুত্ব

 

প্রেসকার্ড নিউজ বিনোদন ডেস্ক, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:০০:০১ : ভগবান শিবকে সন্তুষ্ট করার জন্য মানুষ শিবলিঙ্গের পূজা করে থাকেন। কারণ, শিবলিঙ্গ মহাদেবের প্রতীক বলে মানা হয়। অনেকেই শিবলিঙ্গ মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন, আবার কেউ কেউ ঘরেও রাখেন। কিন্তু আপনি কি জানেন, মন্দিরে থাকা শিবলিঙ্গ আর বাড়িতে থাকা শিবলিঙ্গের মধ্যে বড় পার্থক্য রয়েছে? বাস্তুশাস্ত্র ও জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুযায়ী এই দুই স্থানে শিবলিঙ্গ রাখার নিয়ম, পদ্ধতি ও গুরুত্ব সম্পূর্ণ ভিন্ন।

মন্দির ও বাড়ির শিবলিঙ্গের মূল পার্থক্য

মন্দিরে শিবলিঙ্গ সাধারণত বৃহৎ ও বিশাল আকারে প্রতিষ্ঠিত হয়, যেখানে নিয়মিত পূজা, আবিষেক ও আরতি করা হয়। অপরদিকে, বাড়িতে ছোট আকারের শিবলিঙ্গ রাখা হয়, যার পূজার জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মানা অত্যন্ত জরুরি।

বাড়িতে শিবলিঙ্গ রাখার নিয়ম

জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুযায়ী, বাড়িতে শিবলিঙ্গ রাখার সময় তার আকারের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হয়। বাড়ির জন্য শিবলিঙ্গের আকার আঙুলের সমান হওয়া শ্রেয়। কখনোই ভাঙা বা ক্ষতিগ্রস্ত শিবলিঙ্গ রাখা উচিত নয়।
বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে, শিবলিঙ্গ এমনভাবে স্থাপন করতে হবে যাতে তার মুখ পূর্ব-উত্তর কোণের (ঈশান কোনে) দিকে থাকে। বাড়িতে একটির বেশি শিবলিঙ্গ রাখা অশুভ বলে মনে করা হয়।
সোনার, রুপোর, পিতলের, মাটির বা অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি শিবলিঙ্গ ঘরে রাখা অত্যন্ত শুভ বলে বিশ্বাস করা হয়।

বাড়িতে শিবলিঙ্গ রাখার উপকারিতা

বাড়িতে শিবলিঙ্গ স্থাপন করলে ঘরে ইতিবাচক শক্তির প্রবাহ বাড়ে এবং শান্তি ও সুখের পরিবেশ তৈরি হয়। এটি পরিবারের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে সাহায্য করে।
বিশ্বাস করা হয়, ভগবান শিবের পূজা করলে মানুষের অন্তরের সকল ইচ্ছা পূর্ণ হয় এবং জীবনে সমৃদ্ধি আসে।

মন্দিরে শিবলিঙ্গের গুরুত্ব

মন্দিরে শিবলিঙ্গের তাৎপর্য আরও গভীর। কারণ, ভগবান শিবকে নিরাকার রূপে মানা হয়, আর শিবলিঙ্গ সেই অনন্ত ও অদৃশ্য শক্তির প্রতীক। বলা হয়, শিবলিঙ্গের মধ্যে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ—এই তিন দেবতার শক্তি একত্রিত থাকে।
মন্দিরে শিবলিঙ্গের পূজা করলে সব দেবদেবীর আশীর্বাদ লাভ হয়, জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি আসে, এবং মানসিক শান্তি ও আধ্যাত্মিক জ্ঞান বৃদ্ধি পায়।

সংক্ষেপে:
ঘরে শিবলিঙ্গ রাখলে শান্তি ও ইতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি পায়, আর মন্দিরে পূজা করলে জীবনের সব দিকেই শুভ ফল মেলে। তাই ভক্তি, বিশ্বাস ও নিয়ম মেনে পূজা করলে মহাদেব অবশ্যই কৃপা করেন।