আজকাল মহিলাদের মধ্যে থাইরয়েডের সমস্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি একটি হরমোনজনিত ব্যাধি যা শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। সুষম থাইরয়েড থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যখন একজন মহিলা সন্তান পরিকল্পনা করেন। গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন দ্রুত ঘটে এবং মা এবং অনাগত শিশু উভয়ের স্বাস্থ্যের জন্য থাইরয়েডের সঠিক কার্যকারিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময়, মহিলারা পরীক্ষা ছাড়াই গর্ভধারণের চেষ্টা করেন, যা পরবর্তীতে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক গর্ভধারণের আগে থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণ করা কেন গুরুত্বপূর্ণ।
গর্ভাবস্থার পরিকল্পনা করার আগে আপনার থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণ করা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
আরএমএল হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগের ডাঃ সালোনি চাড্ডা ব্যাখ্যা করেন যে থাইরয়েড হরমোন শরীরের বিপাক, শক্তির মাত্রা এবং হরমোনের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে। যখন একজন মহিলা গর্ভাবস্থার পরিকল্পনা করেন, তখন তার শরীরের আরও হরমোনের সহায়তার প্রয়োজন হয়। অতএব, যদি তার থাইরয়েড ভারসাম্যহীন থাকে, তাহলে গর্ভধারণ বিলম্বিত হতে পারে বা বারবার ব্যাহত হতে পারে।
থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে রাখলে ডিম্বস্ফোটন উন্নত হয়, গর্ভধারণের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া, গর্ভাবস্থার প্রথম মাসগুলিতে শিশুর বিকাশ সম্পূর্ণরূপে মায়ের থাইরয়েড হরমোনের উপর নির্ভর করে। তাই, ডাক্তাররা আগে থেকেই আপনার থাইরয়েডের মাত্রা স্বাভাবিক করার পরামর্শ দেন। সঠিক চিকিৎসা এবং পর্যবেক্ষণ নিরাপদ গর্ভাবস্থা নিশ্চিত করতে পারে।
ভারসাম্যহীন থাইরয়েড গর্ভাবস্থায় কী প্রভাব ফেলতে পারে?
যদি আপনার থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণ না করা হয়, তাহলে গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে। এটি গর্ভধারণ, প্রাথমিক মাসগুলিতে গর্ভপাত এবং অকাল প্রসবের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, এটি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশকেও প্রভাবিত করতে পারে।
মা উচ্চ রক্তচাপ, ক্লান্তি, ফোলাভাব এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতার মতো সমস্যায় ভুগতে পারেন। তাছাড়া, প্রসবের পরেও জটিলতা দেখা দিতে পারে। অতএব, ভারসাম্যহীন থাইরয়েড উপেক্ষা করা মা এবং শিশু উভয়ের জন্যই ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
কীভাবে আপনার থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে রাখবেন?
আপনার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত থাইরয়েড পরীক্ষা করুন।
প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ে আপনার ওষুধ খান।
সুষম এবং পুষ্টিকর খাবার খান।
পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রাম নিন।
মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন।
নিজের ইচ্ছায় ওষুধের মাত্রা পরিবর্তন করবেন না।

No comments:
Post a Comment