রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজের দেশে ফিরে গেছেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এনডিএ-র সাংসদদের ডিনারে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি দুই দিকেই নজর রাখছেন—একদিকে সাংসদদের সঙ্গে ডিনার, অন্যদিকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বদলে যাওয়া সুরে কথা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা খুশি। বলা হচ্ছে, ভারত-রাশিয়ার কূটনৈতিক চাল আমেরিকাকে বড় বার্তা দিয়েছে।
এখন পর্যন্ত এটাই খবর। বিস্তারিত পরে স্পষ্ট হবে। জানা গেছে, ট্রাম্প মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। সম্পর্ক আরও ভালো করা, দুই দেশের বাণিজ্যকে নতুন দিশা দেওয়া এবং কৌশলগত অংশীদারিত্ব বাড়ানো—এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মার্কিন প্রশাসনও ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা, জ্বালানি ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে চায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পুতিনের ভারত সফরের পর ট্রাম্পের ফোন—দুই ঘটনাই ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। রাশিয়া ভারতের সঙ্গে বড় কিছু প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেছে। ভারত সাবধানে এগোলেও আমেরিকাকে বুঝিয়ে দিয়েছে—সহযোগিতা চাই, কিন্তু ১৪০ কোটি ভারতবাসীর স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে নয়। ভারতের বার্তা পরিষ্কার—রাশিয়া পুরনো ও নির্ভরযোগ্য সঙ্গী, ব্রিকস-আরআইসি-এসসিও-র অংশ হিসেবেও সম্পর্ক বজায় থাকবে; পাশাপাশি আমেরিকার সঙ্গেও শক্তিশালী সম্পর্ক গড়তে ইচ্ছুক।
আমেরিকাও ‘অতিরিক্ত চাপ’-এর পক্ষেই নয়
মার্কিন প্রশাসনে ভারতের পক্ষে শক্তিশালী লবি আছে। ভারতও ওয়াশিংটনে নিজের অবস্থান বুঝিয়ে বলতে সচেষ্ট হয়েছে। তাদের লক্ষ্য—ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে ভারতের সম্পর্কে যে ধোঁয়াশা আছে তা দূর করা। মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের কিছু সদস্য মনে করেন, আমেরিকার উচিত ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করা। ভারতের তরফ থেকেও দার্পণ জৈনকে আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যিক আলোচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগে এই দায়িত্বে ছিলেন রাজেশ আগরওয়াল, যিনি এখন বাণিজ্য সচিব। তার তত্ত্বাবধানে কাজ এগোবে। একজন মার্কিন বিশেষজ্ঞ বলেন—২০০০ সালের পর থেকে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক ক্রমাগত উন্নতি করেছে, যদিও সাম্প্রতিক সময়ে কিছু টানাপোড়েন দেখা গেছে। এখন আমেরিকাও বুঝছে—ভারতের ওপর অতিরিক্ত চাপ দিলে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন সমস্যা তৈরি হতে পারে।
পুতিনের সফর কী বার্তা দিল?
আমেরিকার প্রধান আপত্তি ছিল—ভারত রাশিয়া থেকে বেশি পরিমাণে অপরিশোধিত তেল কিনছে। আরেকটি ভয়—ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি ভারত-রাশিয়া-চীনকে আরও কাছাকাছি এনে ফেলতে পারে। এতে ব্রিকস আরও শক্তিশালী হবে, যা আন্তর্জাতিকভাবে আমেরিকার ওপর প্রভাব ফেলবে। তাই ভারত-আমেরিকার মধ্যে সঠিক বোঝাপড়া দু’দেশেরই প্রয়োজন।
ভারতে রয়েছে ইউএসটিআর প্রতিনিধি দল
মার্কিন ইউএসটিআর প্রতিনিধি দল ৯ ডিসেম্বর থেকেই ভারতে আছে। আজ ছিল তাদের ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার শেষ দিন। জানা গেছে, আলোচনা খুবই ইতিবাচক হয়েছে। এই অগ্রগতির পরই ট্রাম্পের মোদীকে ফোন করার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

No comments:
Post a Comment